সুরক্ষা নেই, ক্ষোভ দমকলে

ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভাতে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ন্যূনতম সুরক্ষার ব্যবস্থাটাও নেই। হয় না নিয়মিত প্রশিক্ষণ। বুধবার বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন দমকলকর্মী গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা তাঁদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভটাই যেন উস্কে দিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০১:৪৪
Share:

জতুগৃহ: এমনই তারের বেড়াজালে রয়েছে বড়বাজারের বহু বাড়ি। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভাতে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের ন্যূনতম সুরক্ষার ব্যবস্থাটাও নেই। হয় না নিয়মিত প্রশিক্ষণ। বুধবার বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে ১০ জন দমকলকর্মী গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা তাঁদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভটাই যেন উস্কে দিল।

Advertisement

অগ্নি-সুরক্ষার যথাযথ পরিকাঠামো না থাকায় বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখালেন দমকলকর্মীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, যে ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা কাজ করতে হয়, সেই তুলনায় তাঁদের সুরক্ষার কথা ভাবা হয় না। আর্থিক ভাবেও ততটা সাহায্য পান না তাঁরা। এক দমকলকর্মীর বক্তব্য, ‘‘আমরা নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষকে নানা বিপদ থেকে উদ্ধার করে আনি। অথচ, আমাদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়েই বড় খামতি থেকে গিয়েছে।’’

বুধবার বড়বাজারের পর্তুগিজ চার্চ স্ট্রিটের আগুন নেভাতে গিয়ে যে দশ জন দমকলকর্মী গুরুতর আহত হন, বৃহস্পতিবার তাঁদের দেখতে হাসপাতালে যান সহকর্মীরা। এ দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে দমকলের অস্থায়ী কর্মীদের তরফে অক্সিলারি ফায়ার অপারেটর অভীক ঘোষ জানান, তাঁরা অত্যন্ত স্বল্প বেতনে আগুন নেভানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও রকম সুবিধাও তাঁরা পান না।

Advertisement

দমকলকর্মী অভীক ঘোষ দাবি করেন, এত ঝুঁকির কাজে পর্যাপ্ত পোশাকও থাকে না তাঁদের। থাকে না পর্যাপ্ত অগ্নি-নিরোধক জ্যাকেট অথবা মুখোশ। শুধু একটা হেলমেট এবং এক জোড়া গামবুট অনেক সময়েই যথেষ্ট হয় না নিজেকে রক্ষা করার জন্য। ঠিক যেমনটা ঘটেছে বুধবার। আগুন লেগে যাওয়া দোকানের শাটার তুলতেই যে বিস্ফোরণটি ঘটে, তাতে পুড়ে যান সামনের সারিতে থাকা দমকলকর্মীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, অগ্নি-নিরোধক জ্যাকেট ও মুখোশ থাকলে তাঁদের এতটা ক্ষতি হতো না।

এই সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে এ দিন দমকল দফতরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান দমকলকর্মীরা। বেতন বৃদ্ধি এবং সুরক্ষার দাবিতে সরব হন তাঁরা। দমকলের ডি জি জগমোহন এ দিন দমকলকর্মীদের সুরক্ষাপ্রসঙ্গে জানান, তাঁর দফতরে যথেষ্ট পোশাক এবং যন্ত্রপাতি রয়েছে। কিন্তু কোনও অগ্নিকাণ্ডের সময়ে সেগুলির কতটা কী ব্যবহার করা হবে, তা দমকলকর্মীদের সিদ্ধান্ত। ‘‘আমরা পোশাক জোগান দিতে পারি, পোশাক পরিয়ে দিতে পারি না।’’— বলেন তিনি।

জগমোহন বলেন, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন রাজ্য সরকার ঠিক করে। তবে চিকিৎসার প্রয়োজনে দমকল দফতর সব সময়েই কর্মীদের পাশে থাকে বলে দাবি করেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন