পুজোয় ঘুরতে ভরসা ধ্বস্ত নন এসি রেক

মেট্রো সূত্রের খবর, নন-এসি রেকের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে অভিজ্ঞ, এমন ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে তাঁরা পুনর্নিয়োগ করছেন। পুজোর দিনগুলিতে ভিড়ের চাপে বা অন্য কোনও কারণে নন-এসি রেক বিগড়ে গেলে তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভরসা তাঁরাই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

এখনও চলছে নন এসি রেক।

বছরখানেকেরও বেশি সময় ধরে চলেছে প্রস্তুতি। তার পরেও পুজোর ‘পরীক্ষায়’ পাশ করতে পারল না কলকাতা মেট্রোর নতুন এসি রেক! উল্টে বয়সের ভারে ধুঁকতে থাকা নন–এসি রেকের শুশ্রূষা করার জন্য ফিরিয়ে আনতে হচ্ছে মেট্রোর অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের একাংশকে।

Advertisement

মেট্রো সূত্রের খবর, নন-এসি রেকের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে অভিজ্ঞ, এমন ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে তাঁরা পুনর্নিয়োগ করছেন। পুজোর দিনগুলিতে ভিড়ের চাপে বা অন্য কোনও কারণে নন-এসি রেক বিগড়ে গেলে তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে মেট্রো কর্তৃপক্ষের ভরসা তাঁরাই। বয়সের ভারে জীর্ণ রোগীর জন্য যে ভাবে প্রতিনিয়ত ওষুধ, স্যালাইন থেকে ডাক্তার—সব কিছুর ব্যবস্থা রাখতে হয়, অনেকটা সে ভাবেই নন-এসি রেক নিয়ে সমস্যা হতে পারে ধরে নিয়ে পুজোয় পরিষেবার প্রস্তুতি সারছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রত্যেক স্টেশনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জোগান ঠিক রাখতে রাখা হবে বিশেষ ‘টুল-বক্স’। রেকের রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের একটি করে স্টেশন বাদ দিয়ে একাধিক দলে ভাগ করে রাখা হবে। যাতে যে কোনও প্রয়োজনে তাঁরা দ্রুত সাহায্যের জন্য দু’দিকেই পৌঁছে যেতে পারেন। এ ছাড়া, কোথাও সন্দেহজনক কিছু রয়েছে কি না, সে দিকে লক্ষ রাখতে গার্ড এবং চালকের কামরাতেও থাকবেন ওই কর্মীরা।

Advertisement

যাতায়াতের সময়ে যাত্রীদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের জন্যও বিশেষ মেডিক্যাল দল থাকছে। এসপ্লানেড থেকে কালীঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবেন মেট্রোর হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। রাখা থাকবে অক্সিজেন সিলিন্ডারও।

সব দেখেশুনে মেট্রোকর্মীদের টিপ্পনী, ‘‘দলে খেলোয়াড় কম পড়ায় হেঁপো রোগীকে ফুটবল খেলতে নামাচ্ছি মনে হচ্ছে। খেলার চেয়ে শুশ্রূষার ব্যবস্থা নিয়েই বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে।’’

কেন এমন পরিস্থিতি? এক বছরের বেশি সময় পাওয়া সত্ত্বেও চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি
থেকে আসা চারটি নতুন এসি রেকের একটিকেও পুজোর সময়ে কেন চালাতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ? মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি সি মিশ্র বলেন, ‘‘নতুন রেক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা মিটে গেলেও তার ফলাফল খতিয়ে দেখার কাজ বাকি রয়েছে। ফলে নিরাপত্তা
সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি।’’

মেট্রোকর্তাদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে রেকের সংখ্যা কমে যাওয়া। গত বছর পুজোয় পরিষেবা দেওয়ার জন্য দৈনিক যেখানে ১৯টি রেক পাওয়া গিয়েছিল, এ বার সেখানে মিলছে ১৭টি রেক। তবে ১৩টি এসি রেকের সংখ্যা কমছে না।

মাঝেরহাট সেতুর বিপর্যয়ের পরে গত এক মাসে মেট্রোয় প্রতিদিন যাত্রী বেড়েছে গড়ে ৩০-৪০ হাজার। এই বিপুল যাত্রীর চাপ সামালাতে গত এক মাসে ছুটির দিনেও ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হয়েছে। ফলে নড়বড়ে পরিকাঠামো নিয়ে সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে তীব্র চাপে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

এখন পুজো শুরু হয়ে যায় চতুর্থী থেকেই। তবে ওই দিন থেকেই দুপুরে মেট্রো চলবে না। চতুর্থী থেকে ষষ্ঠী, দিনের প্রথম মেট্রো ছাড়বে সকাল ৮টায় এবং রাতের শেষ মেট্রো ছাড়বে ১১টা ১০ মিনিটে। ফলে একটু বেশি রাত পর্যন্ত মেট্রো চালু থাকবে। অন্য দিকে, সপ্তমী থেকে নবমী দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে পরের দিন ভোর ৪টে পর্যন্ত মেট্রো চলবে। দশমীর দিন মেট্রো চলবে দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, চতুর্থী, পঞ্চমী এবং ষষ্ঠীতে সকালের দিকে কিছু ক্ষণ মেট্রোর সংখ্যা কম থাকলেও সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পর্যাপ্ত সংখ্যাক মেট্রো থাকবে। উৎসবের মরসুমে বিভিন্ন স্টেশনে রক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন