কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল বিধাননগর পুলিশ। শুক্রবার সেই মামলায় সাংসদের নামে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আদালত।
এ দিন বিধাননগর এসিজেএম আদালতের অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অপূর্বকুমার ঘোষ এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। বিচারক আগামী ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে সাংসদকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশও দেন। এই গ্রেফতারি পরোয়ানার ব্যাপারে প্রসূনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “খবরটা শুনেছি। কিন্তু আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। আমি জানি না আমি কী অপরাধ করেছি। তবে আইন আইনের পথেই চলবে। আমি তাতে সব রকম সহযোগিতা করব।”
পুলিশ জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রসূনবাবু বাগুইআটি থেকে ভিআইপি রোড ধরে উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিলেন। লেকটাউনের কাছে এসে ট্রাফিক নিয়ম ভেঙে ‘ইউ টার্ন’ করে তাঁর গাড়ি। ওই মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবল তারাগতি বিশ্বাস গাড়িটিকে থামান। এই নিয়ে গাড়ির চালকের সঙ্গে তাঁর বচসা শুরু হয়।
অভিযোগ, এর পরে প্রসূনবাবু গাড়ি থেকে নেমে ওই ট্রাফিক কনস্টেবলকে চড় মারেন। অভিযোগ, এর পরে তিনি কনস্টেবলের কলার ধরে টানতে টানতে পাশের ট্রাফিক গার্ডে নিয়ে যান। পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পরে ট্রাফিক কনস্টেবলকে কাজে বাধা দেওয়া ও তাঁকে মারধরের একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার তদন্তে পুলিশ সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তিনি পুলিশের কাছে হাজির হননি। পরে আদালতেও হাজির হননি তিনি।
এ দিন আদালত প্রসূনবাবুর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরে কি গ্রেফতার করা হবে সাংসদকে? এ ব্যাপারে কোনও পুলিশকর্তাই এ দিন মুখ খোলেননি।
তবে এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইনজীবীদের একাংশ। কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চৌধুরীর কথায়, ‘‘জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করার পরেও আদালতে সরকারি কৌঁসুলি জামিনের বিরোধিতা না করায় শাসক দলের নেতাকর্মীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। অনুব্রত মণ্ডল এবং তাপস পালের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হলেও সরকারি কৌঁসুলি বিরোধিতা না করায় জামিন মঞ্জুর হয়েছে।’’