পুরকর জমা নেওয়ার নয়া ব্যবস্থা চালু করলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। — নিজস্ব চিত্র
মাসখানেক হল নির্বাচন হয়েছে। এখনও তৈরি হয়নি পূর্ণাঙ্গ মেয়র পরিষদ। বিধাননগর পুরনিগমে এখন শুধু দায়িত্বে রয়েছেন মেয়র। তবে এর মধ্যেই এই এলাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্র একে স্মার্ট সিটি হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে পুর-কর্তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রের অপেক্ষায় না থেকে নাগরিকদের বিভিন্ন পুর-পরিষেবা দিতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের দৈনন্দিন পুর-পরিষেবা দেওয়া তারই একটি ধাপ।
শনিবার বিধাননগর পুরভবনে ‘অনলাইন ভিডিও কনফারেন্স’ ব্যবস্থার উদ্বোধন করেন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তাঁর দাবি, ‘‘নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানাতে নাগরিকদের আর পরিশ্রম করে পুরনিগমে আসতে হবে না। ওয়ার্ড অফিসে এসেই তাঁরা পুরকর্তাদের নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারবেন।’’ উল্লেখ্য, শপথ নেওয়ার পরেই বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র সব্যসাচীবাবু জানিয়েছিলেন, ধীরে ধীরে পুর-পরিষেবাকে তিনি তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর করে তুলতে চান। এতে নাগরিকদের সময় ও পরিশ্রম দুই-ই বাঁচবে। শনিবার মেয়রের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দুই তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, সৌমেন চক্রবর্তী এবং এস রাধাকৃষ্ণণ।
কলকাতা পুরসভায় কর নেওয়ার জন্য নেট-ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু রয়েছে। যার মাধ্যমে ঘরে বসেই টাকা জমা দিতে পারেন নাগরিকেরা। এ ছাড়াও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে শহরে বিভিন্ন জায়গায় ১৬টি ই-সেন্টার তৈরি হয়েছে। সেখানেও তথ্য-প্রযুক্তির অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। করদাতারা সেখানে গিয়ে খুব সহজেই টাকা জমা দিতে পারেন। তবে ভবিষ্যতে কিয়স্ক ব্যবস্থা চালু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
বিধাননগরের এই নয়া ব্যবস্থা প্রসঙ্গে নিগমের পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, নাগরিকেরা তাঁদের সমস্যার কথা ওয়ার্ড অফিসে এসে জানালে সেখান থেকেই তাঁদের সঙ্গে পুরকর্তাদের অনলাইনে কথা বলানো হবে। মেয়র পারিষদেরা তো বটেই, সমস্যা ভেদে মেয়র বা কমিশনারও কথা বলবেন নাগরিকদের সঙ্গে। সব্যসাচীবাবুর কথায়, ‘‘পুরসভা মানুষের দরবারে হাজির হবে।’’ শনিবার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড (মেয়রের নিজের ওয়ার্ড) থেকে এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। এতে প্রবীণ নাগরিকেরা সব চেয়ে বেশি উপকৃত হবেন বলে দাবি পুরকর্তাদের।
এ দিনই ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে অনলাইনে কর ও বাড়ির নকশা অনুমোদনের জন্য বিশেষ কিয়স্ক বসানো হয়েছে। যার মাধ্যমে নাগরিকরা নিজেদের ওয়ার্ড অফিসে এসেই কর জমা দিতে পারবেন। যদি কেউ বাড়ির নকশা অনুমোদন করাতে চান, তা-ও জমা দিতে পারবেন ওই কিয়স্কেই। মেয়র বলেন, ‘‘ওই সব কাজের জন্য নাগরিকদের পুরসভায় এসে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু যে ভাবে বর্তমানে মোবাইলের বিল অনলাইনে জমা দেওয়া যায়, এ বার করও জমা দেওয়া যাবে ওই একই পদ্ধতিতে।’’ বিধাননগরের ৪১টি ওয়ার্ডেই ওই ব্যবস্থা হবে।
পুরকর্তাদের দাবি, আগামী দিনে নাগরিকেরা যাতে বাড়িতে বসেই যে কোনও সমস্যার সুরাহা করতে পারেন, তার ব্যবস্থা হবে। এ দিকে স্মার্ট সিটি নিয়ে নাগরিকদের মতামত চাইতে চালু হয়েছে বিশেষ ‘অ্যাপ’। এ ছাড়াও ভবিষ্যতে বিভিন্ন পুর-পরিষেবার ক্ষেত্রেও অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, তা নিয়েও ইতিমধ্যেই চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।