গল্ফগ্রিন

সশস্ত্র দুষ্কৃতীর খপ্পরে বৃদ্ধ দম্পতি

ভর সন্ধ্যায় গল্ফগ্রিনের মতো ব্যস্ত রাস্তায় আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রধারী দুষ্কৃতীর মুখোমুখি হতে হল বৃদ্ধ দম্পতিকে। আর বাধা দিতে গিয়ে ওই দুষ্কৃতীর অস্ত্রের আঘাতে জখম হলেন এলাকার অন্য এক বাসিন্দা। যা আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এখনও কতটা ফাঁক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪১
Share:

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।

ভর সন্ধ্যায় গল্ফগ্রিনের মতো ব্যস্ত রাস্তায় আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রধারী দুষ্কৃতীর মুখোমুখি হতে হল বৃদ্ধ দম্পতিকে। আর বাধা দিতে গিয়ে ওই দুষ্কৃতীর অস্ত্রের আঘাতে জখম হলেন এলাকার অন্য এক বাসিন্দা। যা আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এখনও কতটা ফাঁক।

Advertisement

বুধবার রাত ন’টা নাগাদ গল্ফগ্রিনের এই ঘটনায় জখম ব্যক্তির নাম শুভেন্দু চক্রবর্তী (৫৯)। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। তদন্তকারীরা জানান, বৃদ্ধ দম্পতির ব্যাগ ও মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল অজ্ঞাতপরিচয় ওই দুষ্কৃতী। ব্যর্থ হয়ে পালানোর সময়ে তার সামনে পড়ে যান শুভেন্দুবাবু। তখনই তাঁকে অস্ত্রের আঘাত করে ওই দুষ্কৃতী।

শুভেন্দুবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তিনি বৃদ্ধ দম্পতিকে বাঁচাতে গেলে ওই দুষ্কৃতী তাঁকে ভাঙা বোতল দিয়ে আঘাত করে। যদিও ঘটনাস্থলে কোনও ভাঙা বোতল মেলেনি বলে দাবি পুলিশের। ওই বৃদ্ধ দম্পতির বক্তব্য, লেকগার্ডেন্সে চিকিৎসকের কাছে যাবেন বলে বুধবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। তখনই ওই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবারও গোটা দিন তাঁরা আতঙ্কিত ছিলেন। এমনকী নিজেদের পরিচয়ও প্রকাশ্যে আনতে চাননি। দম্পতি জানান, ১৯৮০ থেকে তাঁরা গল্ফগ্রিনে থাকলেও কোনও দিন এমন ঘটনার সম্মুখীন হননি। এ ছাড়া, তাঁদের ছেলে বিদেশে ও মেয়ে বিয়ের পরে ইএম বাইপাসের কাছে থাকেন। গল্ফগ্রিনে একাই থাকতে হয় বলে তাঁরা ভয়ে রয়েছেন বলে জানান ওই দম্পতি। তাই পুলিশে তাঁরা ওই ঘটনার অভিযোগ করেননি বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে ওই দম্পতি জানান, পুলিশ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছে। ফের কথা বলারও আশ্বাসও দিয়েছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

গল্ফগ্রিনের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, এলাকায় এ ধরনের ঘটনা হামেশাই ঘটে। দিন কয়েক আগেও একটি মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। তাঁদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পর থেকে এলাকার গলিগুলি বহিরাগত ও মাদকাসক্তদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠে। অভিযোগ, প্রকাশ্যেই চলতে থাকে নেশা-সহ যাবতীয় দুষ্কর্ম। তাঁরা জানান পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয় না। স্থানীয় কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেই ওই বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি যাই। দোষীকে দ্রুত খুঁজে বার করতে বলেছি পুলিশকে।’’

কাউন্সিলরের এই আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না বাসিন্দাদের একাংশ। এক বাসিন্দা সজল চৌধুরীর কথায়, ‘‘গল্ফগ্রিনে কোনও পুলিশি টহলদারি নেই। মাঝেমধ্যে দু’একটি গাড়ি আসে। কিন্তু তা কিছুক্ষণ বড় রাস্তায় দাঁড়িয়ে চলে যায়। আর অপরাধীরা কাজ সারে
গলির ভিতরে।’’

পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে কোনও মাদকাসক্ত থাকতে পারে। সমস্ত খোঁজ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, শনাক্ত করার জন্য এলাকার পরিচিত মাদকাসক্তদের কিছু ছবিও তদন্তকারীরা দেখাতে পারেন ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের কর্তারা জানান, গল্ফগ্রিন এলাকায় নিয়মিত টহল দেয় পুলিশ। গল্ফগ্রিন আবাসিক সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ নন্দী মজুমদার বলেন, ‘‘গল্ফগ্রিনে পুলিশ আউটপোস্ট রয়েছে। তবে এলাকায় আরও পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর আর্জি জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন