—প্রতীকী ছবি।
এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। রবিবার বিকেলে, কেষ্টপুরের বারোয়ারিতলার একটি বাড়ি থেকে। মৃতের নাম তপন মণ্ডল (৫৫)। তিনি পেশায় চালের ব্যবসায়ী ছিলেন।
পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার ভাইফোঁটা উপলক্ষে স্ত্রী রীতা মণ্ডল এবং দুই মেয়ে পিউ ও দিতিকে নিয়ে নিউ টাউনের কাঁঠালবেড়িয়ায় শ্বশুরবাড়ি যান তপনবাবু। সে দিন বিকেলেই তিনি কেষ্টপুরের বাড়িতে ফিরে আসেন। দু’দিন পরে রবিবার বিকেলে মেয়েদের নিয়ে নিউ টাউন থেকে কেষ্টপুরে ফেরেন রীতাদেবী। তাঁর ভাই অনুপ হালদার জানান, বাড়ি ফিরে রীতাদেবী দেখেন, বাড়ির সামনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বারবার ডেকেও স্বামীর সাড়া না-পাওয়ায় জানলায় ধাক্কা দিতেই গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় তপনবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁর স্ত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাগুইআটি থানার পুলিশ ঝুলন্ত দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, সামনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকলেও পিছনের দরজাটি খোলা ছিল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই পরিবারের মধ্যে চলা জমি-বিবাদের প্রসঙ্গে উঠে এসেছে। মৃতের শ্যালক অনুপবাবুর অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরে জমি নিয়ে দাদা অপু মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর জামাইবাবুর গোলমাল চলছিল। অনুপবাবুর অভিযোগ, ‘‘জামাইবাবুকে চার কাঠা জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। ওই জমিতে বাড়ি তৈরি করার কথা ভাবলে জামাইবাবুর দাদা যাতায়াতের রাস্তা দিচ্ছিলেন না। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে অশান্তি চলছিল।’’ তবে হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটল কী ভাবে, তা নিয়ে অন্ধকারে মৃতের পরিবার। অনুপের বক্তব্য, ‘‘আমার জামাইবাবু আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হয় না। ঘটনাটির তদন্ত যাতে হয়, তার জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’’
তপনবাবুদের পাশেই তাঁর দাদা অপুবাবুর বাড়ি। এ দিন তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে সেই বাড়িতে যাওয়া হলে দেখা যায়, বাইরে থেকে তালা বন্ধ। জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে অশান্তি প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মাইকেল মণ্ডল বলেন, ‘‘যাতায়াতের রাস্তা তৈরিতে দাদা বাধা দিচ্ছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ করেছিলেন তপনবাবু। পুজোর পরে এ নিয়ে কথা বলব বলেছিলাম। তার মধ্যে এই মৃত্যু খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।