ছেলের বিরুদ্ধে থানায় নালিশ বৃদ্ধ বাবা-মায়ের

গোকুলবাবু জানিয়েছেন, মানিকতলায় তাঁর একটি তিনতলা বাড়ি ছাড়াও রয়েছে গেঞ্জির কাপড় তৈরির কারখানা এবং একটি দোকান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

নিজের বাড়িতে বসে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন গোকুলচন্দ্র সাহা। রয়েছেন স্ত্রী বাসন্তীদেবী। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

হার্টের অসুখ। একটু বেশি কথা বলতে গেলেই হাঁফিয়ে ওঠেন। শুরু হয় কাশি। খুব একটা হাঁটাচলাও করতে পারেন না।

Advertisement

এমনই অবস্থায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ৭০ বছরের গোকুলচন্দ্র সাহা। তাঁর অভিযোগ, বড় ছেলে গৌতম জোর করে সম্পত্তি লিখিয়ে নিতে চাইছেন। তাঁরা রাজি না হওয়ায় চলছে নির্যাতন। মানিকতলা থানা এলাকার বিপ্লবী বারীন ঘোষ সরণির ঘটনা।

গোকুলবাবু জানিয়েছেন, মানিকতলায় তাঁর একটি তিনতলা বাড়ি ছাড়াও রয়েছে গেঞ্জির কাপড় তৈরির কারখানা এবং একটি দোকান। তা সত্ত্বেও ব়ড় ছেলে সব কিছু থেকে তাঁকে বঞ্চিত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। চিকিৎসার খরচ, এমনকী সংসার চালানোর খরচও নাকি তিনি দেন না। গোকুলবাবুর দাবি, আট-দশ বছর আগে তাঁর হার্টের অসুখ ধরা পড়ায় তিনি ব্যবসার কাজ এবং দোকান দেখভাল করতে পারেন না। প্রায়ই তাঁকে দক্ষিণ ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তাঁর দুই ছেলের মধ্যে গৌতম বাড়ির একতলায় থাকা কারখানার হাল ধরেছেন। শিয়ালদহের দোকান চালান ছোট ছেলে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বড় ছেলে মা-বাবার উপরে অত্যাচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। ওই বৃদ্ধের দাবি, নীচের যে ঘরে পাম্পের সুইচ রয়েছে, সেই ঘর এবং ঠাকুরঘর-সহ আরও দু’টি ঘর বন্ধ করে রাখেন গৌতম। শুধু তা-ই নয়, তাঁরই ব্যবসা চালিয়ে রোজগার করলেও বাবাকে টাকাপয়সা দেন না তিনি। উল্টে কারখানা থেকে উপার্জিত টাকা দিয়ে বড় ছেলে নিউ টাউনে নিজের নামে জমি এবং চারটি বাস কিনেছেন বলেও অভিযোগ গোকুলবাবুর।

Advertisement

গোকুলবাবুর অভিযোগ, বাড়ির একতলা এবং তিনতলা তাঁর নামে লিখে দিতে হবে বলে বাবা-মাকে চাপ দিচ্ছিলেন বড় ছেলে গৌতম। রাজি না হওয়ায় শুরু হয় অত্যাচার। গোকুলবাবু বলেন, ‘‘দিনে প্রায় সওয়া ২০০ টাকার ওষুধ খেতে হয়। সে টাকাও ছেলে দেয় না। উল্টে অত্যাচার শুরু করেছে। না হলে কেউ পুলিশের দ্বারস্থ হয়!’’ তাঁর স্ত্রী বাসন্তীদেবী বলেন, ‘‘আমাদের আর মান সম্মান বলে কিছু রইল না!’’

গোকুলবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে মানিকতলা থানা অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি অভিযুক্ত গৌতমবাবুকে ডেকে বুঝিয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘বাবা আমাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে চাইছেন। ওঁর মতিভ্রম হয়েছে। তাই আমি ঘর বন্ধ রেখেছি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন