ছেলে-বৌমাকে বাঁচাতে গিয়ে পুড়ে মৃত্যু বৃদ্ধার

আগুন আয়ত্তে আনার মধ্যেই সিঁড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার নাম রিনা দে (৬৩)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০১:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

তীব্র পোড়া গন্ধ পেয়ে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যেতেই বৃদ্ধা বুঝতে পেরেছিলেন, বাড়িতে আগুন লেগেছে। কোনও মতে স্বামীকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। বাইরে বেরোতেই দেখেন, আগুন গ্রাস করতে শুরু করেছে দোতলাকে। সেখানে ছিলেন বৃদ্ধার ছেলে, বৌমা ও নাতিরা। আগুপিছু না ভেবে তাঁদের উদ্ধার করার জন্য ফের বাড়িতে ঢুকে দোতলায় ওঠার চেষ্টা করেন তিনি। আর তাতেই ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। আগুনে আটকে পড়েন ওই বৃদ্ধা। এ দিকে, পড়শিদের চিৎকারে আগুন লেগেছে টের পেয়ে দোতলা থেকে সন্তানদের নিয়ে নীচে ঝাঁপ মারেন পুত্র ও পুত্রবধূ। পুত্রবধূ জখম হলেও সকলে বেঁচে গিয়েছেন।

Advertisement

রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দমদম পুরসভার বিশরপাড়ার নবজীবন কলোনিতে। এলাকাটি সেখানকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। খবর পেয়ে আসে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। আগুন আয়ত্তে আনার মধ্যেই সিঁড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতার নাম রিনা দে (৬৩)।

এমন আকস্মিক দুর্ঘটনায় হতভম্ব গোটা পাড়া। কিন্তু সেখানেই তা শেষ হয়নি। সোমবার ওই ঘটনার খবর পেয়ে নবজীবন কলোনিতে হাজির হন দে-পরিবারের আত্মীয়েরা। তাঁদের মধ্যে ছিল এক কিশোর। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, সে কোনও ভাবে এলাকার একটি পুকুরে তলিয়ে যায়। ওই কিশোরকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল, পরে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। মৃতের নাম দেবাংশু দাস (১৭)। তার বাড়ি হরিদেবপুর থানা এলাকায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বাড়ির একতলায় শর্ট সার্কিটের জেরে আগুন লাগে। সেখানে সম্ভবত প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। যার জন্য দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ও ধোঁয়া দেখে রিনাদেবী ও তাঁর স্বামী অধীর দে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখনই তাঁদের খেয়াল হয়, দোতলায় রয়েছে ছেলে, বৌমা ও নাতিরা। তাঁদের কথা ভেবে ফের দোতলায় যাওয়ার চেষ্টা করেন রিনাদেবী। আর তখনই তিনি আগুনের গ্রাসে চলে যান। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে প্রাথমিক ভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। তাঁরাই দমকলে খবর দেন। কিন্তু ততক্ষণে আগুন দোতলায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।

এ দিকে, ঘটনার পরের দিন ওই কিশোর কী ভাবে পুকুরে তলিয়ে গেল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ময়না-তদন্তের জন্য তার দেহ আর জি করে পাঠানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement