মহম্মদ আহমেদ
পর্ণশ্রী, মুরারিপুকুর, মানিকতলা, একবালপুরের পরে এ বার পার্ক স্ট্রিট। ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু কলকাতায়। পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার শরিফ লেনের বাসিন্দা, ১৪ বছরের কিশোর মহম্মদ আহমেদ শনিবার ভোরে তালতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যায়। ওই কিশোরের ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসাবে ডেঙ্গির কথা লেখা আছে। এনএস ওয়ানের পাশাপাশি আইজিএম পরীক্ষাতেও আহমেদের শরীরে ডেঙ্গি সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে।
শরিফ লেনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন চাঁদনি চক এলাকার ব্যবসায়ী মহম্মদ আদিল। আদিলের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট আহমেদ। পড়ত সেন্ট মেরিজ স্কুলের সপ্তম শ্রেণিতে। তার মামা মহম্মদ রিজওয়ান জানান, সাত দিন ধরে জ্বর চলছিল আহমেদের। স্থানীয় এক ক্লিনিকে তাকে দেখানো হচ্ছিল। গত বুধবার রাতে জ্বর বাড়লে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাকে তালতলার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
জ্বর হলেই রক্ত পরীক্ষা করানো দরকার, এই সচেতনতার প্রচার কি আদৌ কার্যকর হচ্ছে? আহমেদের মৃত্যুতে ফের প্রশ্নটা উঠল। কারণ, জ্বর সাত দিন ধরে চললেও প্রথমে তার রক্ত পরীক্ষা করা হয়নি বলে জানান আহমেদের মামা রিজওয়ান। তিনি বলেন, ‘‘ক্লিনিকে দেখানো হচ্ছিল বলে আর রক্ত পরীক্ষা করাইনি। তালতলার হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করা হয়।’’ যে ক্লিনিকে আহমেদের চিকিৎসা প্রাথমিক ভাবে হয়েছিল, চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে শনিবার সেখানে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা, অবরোধও করেন। পরে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ অবরোধ তুলে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, গাফিলতির অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি।
এ দিন শরিফ লেনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এত দিনে পুরসভার টনক নড়েছে। যদিও ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানা আহমেদ বলেন, ‘‘এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার হয়। স্থানীয়দের সচেতন হওয়া জরুরি। যেটুকু শুনেছি, ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল।’’ আহমেদের মা জুলেখা খাতুন কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না।
এ দিকে, দত্তাবাদে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরতি কুমার নামে এক কিশোরীও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আরতির অবস্থা সঙ্কটজনক।