Dengue

ডেঙ্গিতে রাজ্যে ফের মৃত্যু, গত এক মাসে এ নিয়ে প্রাণ গেল ১০ জনের, মোকাবিলা কোন পথে?

প্রশাসন সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে এক দিকে দেড় হাজার কিলোমিটার খাল সংস্কার হয়েছে। অন্য দিকে, ১২৯টি পুরসভায় দু’সপ্তাহ অন্তর পরিচ্ছন্নতার অভিযান চালানোও শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৫৮
Share:

মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ৬২৪টি র‍্যাপিড রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক জনের। গত জুলাই থেকে প্রায় এক মাসে এ নিয়ে মশাবাহিত রোগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল দশ। সেই তালিকায় রয়েছেন, বৃদ্ধ থেকে শিশু সকলেই। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য-সহ বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেই আলোচনা থেকেই উঠে আসা বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে ডেঙ্গি মোকাবিলায় নেমেছে রাজ্য।

Advertisement

জানা যাচ্ছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছিলেন রানাঘাটের নন্দীঘাট গ্রামের বাসিন্দা রতন কর্মকার (৬৬)। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার তাঁকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি ডেঙ্গি পজ়িটিভ। শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরের পর্যবেক্ষণ, এখনও পর্যন্ত নদিয়াতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। মৃতের সংখ্যাও সেখানে বেশি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই জেলা-সহ অন্যান্য জায়গাতেও ডেঙ্গি মোকাবিলায় যাতে খামতি না থাকে, তার জন্য সমস্ত দফতরকে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ডেঙ্গি বেশি হচ্ছে, এমন এলাকায় এক লক্ষ মশারি বিলি করা হবে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে এক দিকে দেড় হাজার কিলোমিটার খাল সংস্কার হয়েছে। অন্য দিকে, ১২৯টি পুরসভায় দু’সপ্তাহ অন্তর পরিচ্ছন্নতার অভিযান চালানোও শুরু হয়েছে। এবং এই অভিযানে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত ওই কর্মসূচি চালাতে বলা হয়েছে।

Advertisement

বিভিন্ন এলাকায় মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ৬২৪টি র‍্যাপিড রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে। ৯ হাজার চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিক্যাল কর্মী-সহ ১ লক্ষ ৩২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে যুক্ত করা হয়েছে ডেঙ্গি মোকাবিলায়। যাঁদের মধ্যে আশাকর্মী ও পুর স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন লক্ষাধিক। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় যেমন মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন, তেমনই নিয়ম না মানলে তা কড়া হাতে মোকাবিলা করাও প্রয়োজন।’’ সূত্রের খবর, বাড়ি বা জমিতে জল জমা নিয়ে উদাসীন থাকার অভিযোগে রাজ্যের প্রায় ১৩ হাজার ৫৯৫ জন বাসিন্দাকে নোটিস পাঠিয়েছে বিভিন্ন পুরসভা।

ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে, এমন ৬১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে কঠিন বর্জ্য এবং চিকিৎসা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। সমস্ত দফতরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ডেঙ্গি মোকাবিলায় ১৫ সদস্যের বিশেষ দল গড়া হবে। কিন্তু যে সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রাম ও শহরের সংমিশ্রণ রয়েছে, সেখানে আরও বেশি সদস্য রাখা হবে। এমন আধা শহুরে পঞ্চায়েতের সংখ্যা প্রায় ১৪০টি। বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুর স্বাস্থ্যকর্মী ও আশাকর্মীদের করা জ্বরের সমীক্ষার উপরে। ওই কর্মীরা কোনও বাড়িতে কারও তিন দিনের বেশি জ্বর রয়েছে বলে খবর পেলেই বাসিন্দাদের বলবেন আক্রান্তের ডেঙ্গি পরীক্ষা করাতে। সেই তথ্য জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরে। রাজ্যের বিভিন্ন জলাশয়ে আড়াই কোটি গাপ্পি মাছ ছাড়ার জন্য মৎস্য দফতরকে বরাতও দিয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন