ভুয়ো অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে এসি লোপাট, গ্রেফতার

নতুন অফিস খোলা হয়েছে। তার জন্য প্রয়োজন চারটি এসি। ফোনে গ্রাহকের ওই অর্ডার পেয়ে আর দেরি করেননি দোকানের মালিক। নির্দিষ্ট ঠিকানায় তিনি এক প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০০:০০
Share:

নতুন অফিস খোলা হয়েছে। তার জন্য প্রয়োজন চারটি এসি। ফোনে গ্রাহকের ওই অর্ডার পেয়ে আর দেরি করেননি দোকানের মালিক। নির্দিষ্ট ঠিকানায় তিনি এক প্রতিনিধিকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তির হাতে গ্রাহক তুলে দেন চারটি এসির দাম বাবদ একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের চেক। কিছু দিন পরে দোকানের মালিক চেকটি জমা দিতে গিয়ে জানতে পারেন, ওই নামে কোনও গ্রাহক নেই। এমনকি, যে ঠিকানায় চারটি এসি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল সেটি আদতে একটি অতিথিশালা। যা এক দিনের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন ওই গ্রাহক।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেও গ্রাহকের খোঁজ না পেয়ে শেষে পাটুলি থানার দ্বারস্থ হন এসি-র দোকানের মালিক। অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করে তদন্তে নেমে শনিবার তদন্তকারীরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছেন। ধৃতের নাম সারোয়ার আলি। তার বাড়ি তপসিয়ায়। সেখান থেকেই তাকে ধরা হয়। আদালতে তোলা হলে ধৃতকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারী জানিয়েছেন, কসবায় তাঁদের একটি দোকান রয়েছে। গত ১৯ এপ্রিল এক গ্রাহক দোকানে ফোন করে জানান, তাঁর নতুন অফিস খোলা হচ্ছে। সে জন্য চারটি এসি প্রয়োজন। দাম ঠিক হওয়ার পরে পাটুলি থানা এলাকার বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি টাউনশিপে ওই এসি পৌছে দিতে বলে সারোয়ার। কথা মতো সেখানে এসি পৌঁছে দিয়ে চেক নিয়ে আসেন অভিযোগকারীর প্রতিনিধি।

Advertisement

দোকানের মালিক পুলিশকে জানিয়েছেন, চেক জমা দিতে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন ওই নামে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। একই সঙ্গে যে ঠিকানায় এসি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, সেটি একটি অতিথিশালা। যা কোনও পরিচয়পত্র না দেখিয়েই সারোয়ার ভাড়া নিয়েছিল। একই সঙ্গে যে নম্বর থেকে সে এসি-র দোকানে ফোন করেছিল, সেই নম্বরটিও ভুয়ো নথি দেখিয়ে নিয়েছিল। পুলিশের দাবি, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, ওই অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আবেদন করেছিল সারোয়ার। তখন তাকে চেক-সহ ব্যাঙ্কের নথি দেওয়া হয়। পরে অবশ্য সারোয়ারের নথি ঠিক না থাকায় তার অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন গ্রহণ করেনি ব্যাঙ্ক।

কী ভাবে অভিযুক্তকে শনাক্ত করল পুলিশ?

অভিযুক্তের সব নথি ভুয়ো হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে মুশকিলে পড়েছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁরা জানতে পারেন, একটি মালবাহী গাড়ি ভাড়া করে বৈষ্ণবঘাটা-পাটুলি টাউনশিপ থেকে ওই এসি নিয়ে চলে এসেছে অভিযুক্ত। গাড়িটি বুক করা হয়েছিল অনলাইনে। এক অফিসার জানান, সেই সূত্র ধরেই সারোয়ারের খোঁজ মেলে। আরও জানা যায়, ধৃত যুবক বছর দুই আগে হায়দারাবাদে একই কায়দায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল। প্রায় দু’বছর সেখানকার চঞ্চলগুড়া জেলে ছিল সে। চলতি বছরের গোড়ায় জামিন পেয়ে বেরিয়ে পটনা, লখনউ-সহ একাধিক জায়গায় একই কায়দায় প্রতারণা করে কলকাতায় এসে ওই ঘটনা ঘটায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন