নির্যাতিতাদের সাহায্যের কেন্দ্রীয় প্রকল্প থমকেই

স্রেফ অর্থাভাবে হাওড়া শহরে আটকে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই পরিকল্পনা।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩১
Share:

—ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত তৈরি হল না অসহায় ও নির্যাতিতা মহিলাদের জন্য ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’। যে সেন্টারে কয়েক দিনের জন্য আশ্রয় পাওয়ার পাশাপাশি তাঁরা আইনগত, চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য পাবেন। এমনকি তাঁদের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষাও করা হবে। কিন্তু অভিযোগ, স্রেফ অর্থাভাবে হাওড়া শহরে আটকে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই পরিকল্পনা।

Advertisement

দেশে মহিলা নির্যাতনের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেশজুড়ে অসহায় ও নির্যাতিতা মহিলাদের জন্য রাজ্যগুলিকে ওই সেন্টার তৈরি করতে বলে। যেহেতু ওই মহিলারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনি সাহায্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সাহায্য পান না, তাই ওই সেন্টারগুলি গড়ে তোলার কথা। ওই ওয়ান স্টপ সেন্টারের মূল উদ্দ্যেশ্য হল একই ছাতার তলায় যাতে নাবালিকা থেকে যে কোনও বয়সের নির্যাতিতা ও অসহায় মহিলারা একসঙ্গে সমস্ত ধরনের সাহায্য পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। এ রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি হাওড়াতেও ওই ধরনের একটি সেন্টার গড়ে তোলার কথা। কিন্তু গত দু’বছরে তার কাজ কিছুই এগোয়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

হাওড়া সমাজকল্যাণ দফতরের এক অফিসার বলেন, ‘‘সরকারি ফাঁকা জমিতে বাড়ি করে ওই সেন্টার তৈরি করার মতো অর্থ নেই। তাই আমরা সরকারি কোনও ফাঁকা বাড়ি খুঁজছি। তা না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ এগোয়নি।’’

Advertisement

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সেন্টারগুলিতে থাকবেন চিকিৎসক, আইনজীবী থেকে পুলিশের পদস্থ আধিকারিক-সহ মনোবিদেরা। এ জন্য ১৫-১৬ জনের একটি কমিটিও করা হয়েছে। যে কমিটিতে জেলাশাসক থেকে পুলিশ কমিশনার, জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ)-সহ হাওড়া আদালতের বর্ষীয়ান আইনজীবীদের রাখা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যৌন হেনস্থার শিকার বা নির্যাতিতা কেউ যদি আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন, তাঁদের কয়েক দিনের থাকার ব্যবস্থাও করা হবে ওই সেন্টারে।

জেলা সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছু করতে মোটামুটি ১৬০০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন। ওই জায়গার জন্য প্রথমে লক্ষ্ণীনারায়ণতলায় দক্ষিণ হাওড়ায় স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালটির দুরাবস্থার জন্য তা বাদ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, কোনও বাড়িতে ওই সেন্টার না করে ফাঁকা জমিতে আলাদা করে তা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু অর্থাভাবে তা করা যাচ্ছে না।

যদিও অর্থাভাবকে গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন)। তিনি বলেন, ‘‘অর্থাভাবের জন্য হচ্ছে না তা ঠিক নয়। এখনও উপযুক্ত জায়গা মেলেনি। এত বিভাগ একটি জায়গায় থাকবে, তাই সব কিছু খতিয়ে দেখে কাজ করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন