শিশু উদ্যান ভেঙে তৈরি হচ্ছে মুক্তমঞ্চ

অথচ কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকতলা ক্যানাল ইস্টের সৌন্দর্যায়নের সময়ে জোর দেওয়া হয়েছিল শিশু উদ্যান তৈরিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৩:২৬
Share:

ভোলবদল: সঙ্কীর্ণ এই উদ্যানেই হচ্ছে মুক্তমঞ্চ।

হিংসুটে দৈত্যের সৌজন্যে ছোটদের এই উদ্যানের তালা খোলেনি কোনও দিন। বরং ট্রাক লরির আড়ালেই চাপা পড়েছিল এক চিলতে উদ্যান। সব দেখেও ঘুমিয়েছিল প্রশাসন। ঘুম যখন ভাঙল, তখন নিদান দেওয়া হল উদ্যান ভেঙে মুক্তমঞ্চ হোক। এর পরেই পুরসভার অন্দরে শুরু হয়েছে কানাঘুষো, অপরিকল্পিত প্রকল্পেই কি ফের নষ্ট হতে চলেছে জনগণের টাকা।

Advertisement

অথচ কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকতলা ক্যানাল ইস্টের সৌন্দর্যায়নের সময়ে জোর দেওয়া হয়েছিল শিশু উদ্যান তৈরিতে। অভিযোগ, শিশুদের খেলা তো দূর, উদ্যানগুলি খোলাই হয়নি কোনও দিন। এর সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে বড় বড় লরি। উদ্যানের প্রবেশপথও চলে গিয়েছে সে সবেরই আড়ালে। বাম পুর বোর্ডের সময়ে তৈরি অনিল করের নামাঙ্কিত ওই শিশু উদ্যান।

সেটি বন্ধ করে সম্প্রতি মুক্তমঞ্চের শিলান্যাস করলেন তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্যকিশোর রাউত। পুরসভা সূত্রের খবর, এ কাজের জন্য খরচ ধার্য হয়েছে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। কাউন্সিলর জানান, প্রায় ২০০ জনের বসার জায়গা হচ্ছে ওই মুক্তমঞ্চ লাগোয়া এলাকায়। তৈরি হবে ক্যাফেটেরিয়া। কাজও শুরু হয়েছে।

Advertisement

তারই প্রচারে উদ্যানের গায়ে পড়েছে ব্যানার।

তবে প্রকল্প ঘিরে ইতিমধ্যেই কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, খালের পাড়ে আরও জায়গা থাকতে পনেরো ফুট চওড়া শিশু উদ্যানটি তুলে দিয়ে মুক্তমঞ্চ হচ্ছে কেন? লরি আর ট্রাকের আড়াল পেরিয়ে কোনও দিন কি ওই মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান করা সম্ভব? সেই তো ফের পড়ে থেকে আবারও টাকা জলে যাবে। মানিকতলা কেন্দ্রের বিধায়ক সাধন পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘অনেকেই নিজের মতো করে যা খুশি তাই করেন। মানুষের চাহিদা এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করেই কাজ করা উচিত।”

এক দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, উদ্যানের গায়ে কাউন্সিলরের নাম-সহ মুক্তমঞ্চ গড়ার ব্যানার ঝুলছে। চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। আগের মতোই সদর আটকে পরপর দাঁড়িয়ে লরি, মোটরবাইক। মুক্তমঞ্চ গড়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত কাউন্সিলরের থেকে কিছু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। দখল হয়ে যাওয়া আরও জায়গা থাকতে হঠাৎ শিশু উদ্যান তুলে মুক্তমঞ্চ করার পরিকল্পনা কেন? ট্রাক, লরি পার্কিং না সরালেও কি জনগণ ওই মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান করতে আসবেন? পনেরো ফুট চওড়া উদ্যানে ২০০ দর্শক বসবেন কোথায়? সব প্রশ্ন শুনে অনিন্দ্যবাবুর একটাই উত্তর, ‘‘ভাল প্রকল্পে খারাপ খুঁজে লাভ নেই। সাধারণ মানুষের জন্য উত্তর কলকাতার প্রথম মুক্তমঞ্চ হচ্ছে এটি।’’

ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন