দিদির মৃত্যুর পরে ডায়েরি লেখার ধাঁচ বদলান পার্থ

আগেও লিখতেন ডায়েরি। কিন্তু দিদি দেবযানী মারা যাওয়ার পরেই ডায়েরি লেখার কায়দায় বদল এনেছিলেন পার্থ দে। শেক্সপিয়র সরণির রবিনসন স্ট্রিটে কঙ্কাল-রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে এমনই দাবি করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০৩:২০
Share:

আগেও লিখতেন ডায়েরি। কিন্তু দিদি দেবযানী মারা যাওয়ার পরেই ডায়েরি লেখার কায়দায় বদল এনেছিলেন পার্থ দে। শেক্সপিয়র সরণির রবিনসন স্ট্রিটে কঙ্কাল-রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে এমনই দাবি করছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শুক্রবার রবিনসন স্ট্রিটে পার্থদের ফ্ল্যাটে ফের তল্লাশি চালায় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় পার্থের লেখা নতুন একটি ডায়েরি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেই ডায়েরির লেখার সঙ্গে আগে পাওয়া পার্থের বিভিন্ন ডায়েরির লেখার কায়দার মিল নেই। বরং অনেকটাই মিল রয়েছে দেবযানীর লেখার আদলের সঙ্গে। কিন্তু বিস্ময়ের কথা, দিদির কোনও কথা ওই ডায়েরিতে লেখেননি পার্থ।

পুলিশ বলছে, দেবযানীর ডায়েরিতে দিন-তারিখ ধরে সব কিছু লেখা থাকত। নিজের কাজকর্ম সম্পর্কেও লিখতেন তিনি। কিন্তু এত দিন ধরে পার্থের যে-সব ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছিল, তাতে কোনও দিন-তারিখের উল্লেখ থাকত না। তার ফলে সেগুলি কবে লেখা, তা-ও বুঝতে পারছিল না পুলিশ। এ দিন উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে নির্দিষ্ট দিন-তারিখ ধরে লেখা মিলেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ওই ডায়েরি লিখেছেন তিনি। তা থেকেই পুলিশের অনুমান, গত ডিসেম্বরের শেষে দেবযানীর মৃত্যুর পর থেকেই দিদির কায়দায় ডায়েরি লেখা শুরু করেছিলেন পার্থ।

Advertisement

ওই ডায়েরিতে কী লেখা আছে?

পুলিশি সূত্রের খবর, কবে কখন কী খাচ্ছেন, তা-ও নির্দিষ্ট ভাবে লিখেছেন পার্থ। বেশ কিছু আধ্যাত্মিক বাণীও পাওয়া গিয়েছে ওই ডায়েরিতে। উদাহরণ হিসেবে এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘ওই ডায়েরিতে লেখা রয়েছে, ‘আমি খেলাম। ভগবানকে ধন্যবাদ।’ বিভিন্ন স্মাইলি এবং কার্টুনও ওই ডায়েরিতে এঁকেছেন পার্থ। পারিবারিক সলিসিটর এবং পার্থের বাবা অরবিন্দ দে-র সম্পত্তি বিক্রির কথাও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু দিদি সম্পর্কে একটি কথাও লেখেননি তিনি।

অথচ পার্থ ওই ডায়েরিতে দিদির ধাঁচ-ধরন অনুসরণ করেছেন পদে পদে। পুলিশি সূত্র জানাচ্ছে, দেবযানী ডায়েরি লেখার জন্য নানা রঙের কালি ব্যবহার করতেন। পার্থও অন্তত এই ডায়েরি লিখেছেন নানা ধরনের কালি দিয়ে।

পার্থের লেখার কায়দায় হঠাৎ এমন বদল কেন?

সরাসরি জবাব দেওয়ার কেউ নেই। তবে তদন্তকারীদের ধারণা, দিদির মৃত্যুর পরে হয়তো তাঁর ডায়েরি লেখার কায়দা আঁকড়েই বাঁচতে চেয়েছিলেন পার্থ। সবিস্তার বিশ্লেষণের জন্য মনোবিদদের সঙ্গেও কথা বলতে চায় পুলিশ।

দে পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে তদন্তকারীরা জেনেছেন, দু’বার গয়না বিক্রি করেছিলেন অরবিন্দবাবু। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বার গয়না বেচে ছ’লক্ষ টাকা পান তিনি। পরের মাসেই ফের গয়না বিক্রি করে মেলে চার লক্ষ টাকা। পুলিশের অনুমান, অরবিন্দবাবুরা হয়তো আর্থিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তাই গয়না বেচে ছেলের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করছিলেন অরবিন্দবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন