নেবুবাগান লেন

পাড়ার আড্ডাটা আজও জমজমাট

পাড়াটা এখনও মধ্যবিত্ত বাঙালির স্বপ্ন। বেশির ভাগ বাড়ি একশো বছরের পুরনো। বড় বড় থামের গায়ে, কার্নিশে টিকে থাকা পঙ্খের কাজ।

Advertisement

পার্থ দে

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০১:১০
Share:

পাড়াটা এখনও মধ্যবিত্ত বাঙালির স্বপ্ন। বেশির ভাগ বাড়ি একশো বছরের পুরনো। বড় বড় থামের গায়ে, কার্নিশে টিকে থাকা পঙ্খের কাজ। সেগুন কাঠের খড়খড়ি আর পাল্লার জানলা, বাড়ির নীচে রক আর পাড়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত সারিবদ্ধ রিকশা।

Advertisement

ছেলেবেলাটা কেটেছে খেলাধুলো, হইহুল্লোড়ে। এখন রাতেও পাড়াটা আলো ঝলমলে। পাড়াটা পরিচ্ছন্ন থাকছে। নেবুবাগানের হাতে টানা রিকশার খাটালটি বহু পুরনো। আগে তো শ’খানেক রিকশা পাড়ায় থাকত। এখন কুড়ি-পঁচিশটায় ঠেকেছে। পড়শিদের সঙ্গে সম্পর্কের উষ্ণতা আজও আছে এখানে। এখনও গাছের আম কিংবা পুজোর নাড়ু আসে প্রতিবেশীদের বাড়ি থেকে।

নেবুবাগানের আড্ডাটা আজও বেঁচে আছে। সে রকেই হোক বা বাড়ির ভিতরে। আড্ডার অন্য ঠিকানা লালের চায়ের দোকান। তবে যুব সম্প্রদায়ের আড্ডায় হোয়াট্স অ্যাপ ঢুকে পড়েছে। আরও এক আকর্ষণ তাস খেলা।

Advertisement

লে-ছক্কা: খেলায় মগ্ন ছোটরা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

বিশ্বকর্মা পুজোয় আকাশটা ঘুড়িতে ঢেকে যেত। আমিও সেই নেশায় বুঁদ ছিলাম। আজও ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ছাদে উঠে পড়ি ঘুড়ি ওড়াতে। তবে ফাঁকা আকাশটাকে দেখে কষ্ট হয়। আজকের ছেলেরা ঘুড়ি ওড়ানোর চেয়ে মোবাইল গেম খেলতেই বেশি ভালবাসে।

ছোটবেলায় স্কুল থেকে ফিরে পাড়ার গলিতে ফুটবল, ক্রিকেট খেলা হতো। এখনও ছবিটা খুব একটা বদলায়নি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইপিএল-এর ধাঁচে হ্যালোজেন আলো লাগিয়ে শীতকালে ক্রিকেট প্রতিযোগিতা।

একটা ঘটনা বলি। আমি তখন নবদ্বীপে। খবর এল দুর্ঘটনায় আমার ছোট্ট মেয়ের আঙ্গুল বাদ গিয়েছে। স্ত্রীর কাছে শুনেছি, সে দিন পাড়ার সকলে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। এখানকার মানুষের ভালবাসা আর জীবনযাত্রার সারল্য এখানেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার প্রেরণা দেয়।

লেখক চিকিৎসক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন