— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত অংশে চারটি স্টেশন সামলানোর জন্য রয়েছেন মাত্র এক জন স্টেশন সুপার। এই মেট্রোরই অন্য অংশ, শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পথে আটটি স্টেশনের পরিষেবা পরিচালিত হয় শিয়ালদহ থেকে, মাত্র এক জন স্টেশন সুপারের তত্ত্বাবধানে। এই ভাবে অস্বাভাবিক কম কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রী-সুরক্ষার সঙ্গে আপস করছেন বলে বুধবার পার্ক স্ট্রিটে মেট্রো ভবনের সামনে একটি সভায় অভিযোগ তুললেন তৃণমূল বিধায়ক তথা কলকাতা মেট্রোর ‘প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’-এর সভাপতি মদন মিত্র। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচন মিটলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর হাত ধরে কলকাতা মেট্রো পরিষেবার বেসরকারিকরণ শুরু হতে পারে, এই গুঞ্জন ছড়ানোর পরে আশঙ্কা বেড়েছে কর্মীদের মধ্যে। এরই প্রতিবাদে এ দিন শাসকদল ঘনিষ্ঠ ‘প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’-এর পক্ষ থেকে মেট্রো ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কাজের দিন হওয়া সত্ত্বেও ওই বিক্ষোভ সমাবেশে মেট্রোর শ্রমিক ও কর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে মেট্রোর শীর্ষ কর্তারা অহরহ কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এ হেন দুর্ব্যবহারের জেরে সম্প্রতি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত অংশের এক স্টেশন সুপার আচমকা গুরুতর অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন। মেট্রো সূত্রের খবর, এক মাসের মধ্যে ওই আধিকারিককে ১০ হাজার স্মার্ট কার্ড বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও মেট্রোর কর্মীদের বড় অংশের অভিযোগ, বাস্তবে লক্ষ্যমাত্রা ধরে স্মার্ট কার্ড বিক্রি করা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাজ নয়। মেট্রোর নিয়মিত যাত্রীরা তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী স্মার্ট কার্ড কেনেন।
এ দিন ওই ঘটনার উল্লেখ করে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন মদন। তিনি জানান, ভোট মিটলে মেট্রোর বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা হবে। মদন বলেন, ‘‘মেট্রোয় অবিলম্বে সেফটি ক্যাটিগরির শূন্য পদে লোক নিয়োগ করতে হবে। মেট্রোর রানিং স্টাফদের (মোটরম্যান বা মেট্রোর চালক) জন্য যে কাজ নির্দিষ্ট আছে, যাত্রী-সুরক্ষার সঙ্গে আপস করে সেই কাজ টেকনিশিয়ানদের দিয়ে করানো যাবে না।’’ রেল মন্ত্রকের তৈরি পদের সঙ্কোচন করে অন্য পদের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার বিরোধিতাও করেন তিনি।
সমাবেশে রেলের বেসরকারিকরণ নিয়ে সরব হন সংগঠনের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত এবং সাধারণ সম্পাদক সমীর বেরা। প্রতিবাদসভার কথা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজারকে আগাম জানানো হলেও এ দিন তিনি মেট্রো ভবনে ছিলেন না। সভার পরে সংগঠনের তরফে মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে ১১ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়।