শিয়ালদহ প্ল্যাটফর্ম

রাত্রিবাস বেআইনি, না জেনে দুর্ভোগে যাত্রীরা

নিয়ম রয়েছে, প্রচার নেই। ফলে ওয়াকিবহাল নন যাত্রীরাও। তাতেই বিপত্তি বেধেছে শিয়ালদহ স্টেশনে। রেলের নিয়ম, শেষ ট্রেন যাওয়ার পরে প্ল্যাটফর্মে আর ১৫ মিনিট থাকতে পারবেন যাত্রীরা। তার পরে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু অনেক যাত্রীই শেষ ট্রেন ধরতে পারেন না। এতদিন প্ল্যাটফর্মেই থেকে যেতেন তাঁরা। ভোরে প্রথম ট্রেনে আবার চলে যেতেন।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫০
Share:

নিয়ম রয়েছে, প্রচার নেই। ফলে ওয়াকিবহাল নন যাত্রীরাও। তাতেই বিপত্তি বেধেছে শিয়ালদহ স্টেশনে।

Advertisement

রেলের নিয়ম, শেষ ট্রেন যাওয়ার পরে প্ল্যাটফর্মে আর ১৫ মিনিট থাকতে পারবেন যাত্রীরা। তার পরে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে চলে যেতে হবে। কিন্তু অনেক যাত্রীই শেষ ট্রেন ধরতে পারেন না। এতদিন প্ল্যাটফর্মেই থেকে যেতেন তাঁরা। ভোরে প্রথম ট্রেনে আবার চলে যেতেন।

কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের আগে পরে জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে পুলিশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় বিপত্তি বেধেছে শিয়ালদহে। যাত্রীদের অভিযোগ, শেষ ট্রেন না পেয়ে যাঁরাই প্ল্যাটফর্মে থাকছেন, তাঁদেরই ধরে নিয়ে যাচ্ছে জিআরপি। জোর করে থানায় নিয়ে গিয়ে সাদা কাগজে নাম লিখিয়ে সারারাত আটকে রেখে ৩৫১ টাকা দিতে বলা হচ্ছে। না দিলে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানোর ভয় দেখানো হচ্ছে।

Advertisement

বুধবার রাতে প্রায় শ’চারেক যাত্রী রাতে শেষ ট্রেন না পেয়ে বসেছিলেন স্টেশন চত্বরে। যাত্রীদের অভিযোগ, রাত ১২টার পরে সাদা পোশাকে দু’এক জন পুলিশকর্মী তাঁদের বলেন, ‘‘প্ল্যাটফর্ম চত্বরে বসে থাকা যাবে না। থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে নাম লিখিয়ে আসতে হবে।’’ বুধবার রাতে পুলিশের ওই জুলুমের মুখে পড়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির বাসিন্দা মানস জোতদার। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন চলে গিয়েছে বলেই প্ল্যাটফর্মে ছিলাম। অত রাতে কোথায় যাব? আমরা তো ছিলাম স্টেশনের টিকিট জোনের বাইরে। সেখানেও পুলিশ জুলুম করবে?’’

যাত্রীদের আরও অভিযোগ, এই কথা শুনে অনেকেই শিয়ালদহ জিআরপি থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু নাম লেখার পরেই পুলিশকর্মীরা জানান, ৩৫১ টাকা দিতে হবে। নইলে মামলা দিয়ে পরের দিন আদালতে পাঠানো হবে। ফলে অনেকেই বাধ্য হন ওই টাকা দিয়ে দিতে। কেউ কেউ টাকা দিতে না চাওয়ায় লক-আপে আটকে রাখা হয়।

রেল পুলিশ অবশ্য যাত্রীদের ওই অভিযোগ মানতে চায়নি। রেল পুলিশ কর্তারা বলেছেন, ‘‘রাতের তল্লাশি অভিযান প্রথম নয়। নিয়মিতই করা হয়। আর রাতে যাঁরা প্ল্যাটফর্মে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই নানা রকম অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ ওঠে। ওই যাত্রীদের ধরা হয়েছিল। থানা
থেকে জামিন দিতেই ওই ৩৫১ টাকা নেওয়া হয়েছে।’’

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘রেলের নিয়মে শেষ ট্রেন চলে যাওয়ার পরে যাত্রীদের আর প্ল্যাটফর্মে থাকতে দেওয়ার কথা নয়। কিন্তু মানবতার খাতিরে কেউ কিছু বলে না। কিন্তু এখন যাত্রীদের সুরক্ষার জন্যই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, কাউকে আটক করার আগে ভাল করে দেখে নেওয়া উচিত পুলিশের। নইলে অযথা হয়রান হবেন যাত্রীরা। সেটা কাম্য নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন