নোটবন্দির পরে প্রাথমিক ভাবে খুচরো নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই সমস্যা এখন অনেকটা মিটলেও মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন এক সমস্যা। যার কেন্দ্রে এক টাকার ছোট মুদ্রা। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, এই কয়েন নিয়ে বিবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমজনতাকে। বাজারে, রাস্তাঘাটে কোনও কিছুর দাম দিতে গেলে বা গাড়ির ভাড়া মেটাতে গেলে ছোট মুদ্রাটি নেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি তুলছেন অনেকে। যা অনেক সময়ে গড়াচ্ছে বচসায়। বহু মানুষের অভিযোগ, খুচরো লেনদেনের সময়ে ছোট মুদ্রা দিলে তাঁদের নিতে হচ্ছে, অথচ তাঁরা কোথাও মুদ্রা দিতে গেলে অনেকেই নিতে চাইছেন না।
শহরের ছোট-বড় ব্যবসায়ীদের একাংশের আবার বক্তব্য, তাঁদের কাছে বহু সংখ্যক এক টাকার মুদ্রা জমে রয়েছে। গোনার সমস্যার ‘অজুহাত’ দেখিয়ে ব্যাঙ্ক তা নিতে চাইছে না। যে কারণে তাঁরাও অনেক সময়ে এক টাকার ছোট মুদ্রা নিতে পারছেন না। আবার মানুষজন বলছেন, বাজারে, অটো-বাসে প্রায় সব সময়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁদের কাছেও এক টাকার মুদ্রা জমে যাচ্ছে। কী ভাবে সেগুলি খরচ হবে, বুঝতে পারছেন না তাঁরা। ব্যাঙ্ক থেকেও টাকার বদলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে খুচরো দেওয়া হচ্ছে বলে অনেকের দাবি। ফলে সব মিলিয়ে দেখা দিয়েছে উভয়সঙ্কট।
খুবই ছোট এবং হাল্কা বলে বাজারে আসার পর থেকেই এক টাকার মুদ্রা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। শুরু হয়েছিল বিতর্কও। শ্যামবাজারের বাসিন্দা সৌমলতা দত্ত, যাদবপুরের জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়েরা জানাচ্ছেন, খুচরো লেনদেনের সময়ে তাঁদের এক টাকার ছোট মুদ্রা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু দেওয়ার সময়ে অনেকেই তা নিতে চাইছেন না বা নিলেও আপত্তিকর কথা শোনাচ্ছেন বলে অভিযোগ। অটো বা বাসেও এই ছোট মুদ্রাটি নিয়ে মাঝেমধ্যে সমস্যায় পড়ছেন অনেক যাত্রী। কিছু অটো রুটে এক টাকার মুদ্রা দেওয়া-নেওয়া চললেও অনেক জায়গায় চালকেরা তা নিতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। ছোট ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, বহু বাজারে অনেকের কাছেই এক টাকার ছোট মুদ্রা প্রচুর জমে রয়েছে। পাইকারি বাজারে জিনিস কিনতে গেলেও খুচরো নিচ্ছে না। ফলে সমস্যা বাড়ার আশঙ্কায় এক টাকার ছোট মুদ্রা নেওয়া হচ্ছে না।
সূত্রের খবর, আলিপুর-সহ দেশের টাঁকশালগুলিতে অবশ্য এক টাকার ছোট মুদ্রার উৎপাদন চালু রয়েছে। দেশের ব্যাঙ্কগুলিতেও এক টাকা-সহ সব ধরনের মুদ্রা পাঠাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। টাঁকশালের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কলকাতা-সহ পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির কয়েকটি শহরে এক টাকার ছোট মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে তাঁদের কানেও পৌঁছেছে। তবে এর আশু সমাধান কী, সেই উত্তর অবশ্য এই মুহূর্তে কারও কাছেই নেই।