আছে প্রকল্প, তবুও ফুটপাথেই বাস

শহরের নানা জায়গায় অনেকে ফুটপাথে বাস করেন। অথচ, এঁদের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ফুটপাথবাসী তার খবর রাখেন না। পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আবাসের ব্যবস্থা হয়নি বলেও অভিযোগ।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share:

চেনা ছবি। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

শহরের নানা জায়গায় অনেকে ফুটপাথে বাস করেন। অথচ, এঁদের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ফুটপাথবাসী তার খবর রাখেন না। পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আবাসের ব্যবস্থা হয়নি বলেও অভিযোগ।

Advertisement

ফুটপাথবাসীদের একাংশ জানান, উপার্জনের জন্য ভিন্ন জেলা বা পাশের রাজ্য থেকে তাঁরা শহরে এসেছেন। কিন্তু যা উপার্জন হয় তাতে বাড়ি ভাড়া করে থাকা সম্ভব নয়। তাই ফুটপাথে আশ্রয় নিয়েছেন।

এই প্রবণতাকে রুখতেই রাজ্য সরকারের দু’টি এবং কেন্দ্রের একটি প্রকল্প চালু আছে। সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, এ ধরনের মানুষদের জন্য রাজ্য সরকারের গৃহহীন আশ্রয় প্রকল্প চালু আছে। এ ছাড়াও রয়েছে রাত্রিবাসের আলাদা ব্যবস্থা। পথশিশুদের জন্যে ‘ওপেন শেল্টার’ নামের একটি প্রকল্প আছে। এই প্রকল্পে পথশিশুদের থাকা, পড়াশোনা, খাওয়ার ব্যবস্থা হয়। চলতি বছরে শেল্টার পিছু (২৫টি শিশু প্রতি) ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। এ শহরেই প্রায় ১৮টি ওপেন শেল্টার রয়েছে।

Advertisement

কিন্তু অধিকাংশ ফুটপাথবাসীর অভিযোগ, এই প্রকল্পগুলি সম্পর্কে তাঁরা জানেন না। কারণ, কোনও প্রচার নেই। পার্ক স্ট্রিটের এক ফুটপাথবাসী বলেন, ‘‘আমরা কিছুই জানি না। জানলে সুবিধা নেব না কেন?’’

রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব রোশনী সেন জানান, তিনটি প্রকল্পে তিন পদ্ধতিতে কাজ হয়। প্রথম ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ অথবা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ফুটপাথবাসীদের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিয়ে যায়। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশের পরেই আবাসনের ব্যবস্থা হয়। রাত্রি-নিবাসের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পুরসভার। যাঁরা রাত্রিবাস করতে চান, তাঁরা পুরসভার মাধ্যমে সমাজকল্যাণ দফতরে যোগাযোগ করেন। এর পরে সমাজকল্যাণ দফতরের চক্রাচর নিয়ামক বিভাগের তত্ত্বাবধানে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এঁদের দায়িত্ব নেয়। পথশিশুদের ক্ষেত্রে শিশু কল্যাণ সমিতি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অথবা পুরসভা কাজ করে।

অভিযোগ, রাত্রি-নিবাসের ক্ষেত্রে পুরসভা ঠিকমতো উদ্যোগী নয়। এমনকী কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রোশনী দেবীর মন্তব্য, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তদন্ত করে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তৃণমূলের ইকবাল আহমেদ বলেন, ‘‘অর্থও বরাদ্দ থাকলেও স্থানাভাবের কারণেই ‘নাইট শেল্টার’-এর ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। চেষ্টা করছি দ্রুত বাড়ির ব্যবস্থা করতে।’’ সব শর্ত মেনে যে বাড়ি পেতে সমস্যা হচ্ছে তা মেনে নিয়েছেন সমাজকল্যাণ দফতরের কর্তারাও। পাশাপাশি প্রকল্পগুলি নিয়ে প্রচারেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন