দূর হটো বৃষ্টি, পথে নেমে জানিয়ে দিল সপ্তমীর ভিড়

সন্ধ্যার পরে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে যাত্রী উগরে দিয়েছে লোকাল ট্রেনগুলি। সেখান থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড আর বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট হয়ে সেই ভিড় আছড়ে পড়েছে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ আর কলেজ স্কোয়ারে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

চতুর্থী থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত এত লোক রাস্তায় নেমেছিল যে, সপ্তমীর ভিড় নিয়ে সংশয়ে ছিল পুলিশ। কিন্তু বুধবার শহরের কিছু অংশে বৃষ্টি সত্ত্বেও হার মানেননি দর্শকেরা। সন্ধ্যার পরে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনে যাত্রী উগরে দিয়েছে লোকাল ট্রেনগুলি। সেখান থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড আর বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট হয়ে সেই ভিড় আছড়ে পড়েছে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ আর কলেজ স্কোয়ারে।

Advertisement

দুপুরে আকাশ কালো করে বৃষ্টি আসায় চিন্তায় পড়ে যান গড়িয়ার নবদুর্গার উদ্যোক্তারা। কিন্তু বৃষ্টি বেশি ক্ষণ থাকেনি। দক্ষিণ প্রান্তে এবং উত্তর শহরতলিতে কোথাও কোথাও বৃষ্টি হলেও মধ্য কিংবা উত্তর কলকাতায় তার প্রভাবই পড়েনি। মানুষ হাতে ছাতা নিয়েই বেরিয়ে পড়েছেন। বিকেল গড়াতেই ভিড়টা জনজোয়ারে পরিণত হয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ— ভিড়ের চেহারা বদলায়নি। রাত যত গড়িয়েছে, ততই ভিড় বেড়েছে বিভিন্ন মণ্ডপে।

সপ্তমীর দুপুর থেকেই যানজটে ভুগেছেন রাস্তায় নামা মানুষ। একেই পুলিশ ছিল কম। তার উপরে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ মহরমের তাজিয়ার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশপ্রাণ শাসমল রোড ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের যান চলাচল। তাতে অন্য রাস্তায় চাপ বেড়ে নাকাল হয় পুলিশ।

Advertisement

গড়িয়া থেকে দিঘাগামী বাস ধরেছিলেন পিনাকী সরকার। রাস্তা বন্ধ থাকায় দূরপাল্লার ওই বেসরকারি বাসটিকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের মোড় থেকে লেক গার্ডেন্সের দিকে ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। সেই রাস্তায় তখন ঠাকুর দেখতে বার হওয়া মানুষের ভিড়। সঙ্গে অসংখ্য গাড়ি। বাধা পেরিয়ে পিনাকীবাবুর বাস যখন বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজা অতিক্রম করছে, তখন বিকেল তিনটে।

লালবাজার তখনই জানিয়েছিল, বিকেলে রাস্তায় নামবে বিশাল বাহিনী। বিকেল চারটে নাগাদ হাতিবাগানে পুলিশ যখন বিভিন্ন রাস্তার মুখে ব্যারিকেড বসাল, একমুখী করে দিল বিভিন্ন রাস্তা, তখন সাময়িক যানজট তৈরি হয়। কিন্তু সময় কিছুটা পেরোতেই দেখা গেল, সুশৃঙ্খল ভাবে যাতায়াত করছে বাস-মিনিবাস। রাস্তায় গাড়ি রাখলেই পুলিশ চাকায় আটকে দিয়েছে কাঁটা।

বর্ধমান থেকে পার্ক স্ট্রিটে আসছিলেন শিখর দাস। কোন পথে ঢুকবেন, তা জানতে চেয়েছিলেন এক পুলিশ বন্ধুর কাছে। বন্ধু বললেন, ‘‘কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে নয়, ডানলপ-চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে এসো।’’ ছ’টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ঢুকে শিখরবাবু অবাক। বাগবাজার থেকে ধর্মতলায় পৌঁছতে লাগল আধ ঘণ্টার সামান্য বেশি।

দেশপ্রিয় পার্ক-রাসবিহারী মোড় পেরোতেও বেশি বেগ পেতে হয়নি এ দিন। গোলপার্ক-ঢাকুরিয়া হয়ে গড়িয়া যেতেও সমস্যা হয়নি। ‘‘অন্য দিনের থেকে আগেই পৌঁছে গেলাম,’’ মন্তব্য বৈষ্ণবঘাটার মেঘনা দত্তের।

সপ্তমীর রাতে পুলিশই হিরো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন