বিক্ষোভে, অবরোধে অচল শহর, দুর্ভোগ

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠনের তরফে সিএবি এবং এনআরসি-র বিরোধিতার জন্য জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:১৬
Share:

প্রতিবাদ: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে মিছিল ধর্মতলায়। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতার ঢেউ আছড়ে পড়ল শহরেও। শুক্রবার শহরের একাধিক জায়গায় রাস্তা অবরোধ করল বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন। যার জেরে কাজের দিন দুপুর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় যানজটে নাকাল হলেন সাধারণ মানুষ। দুপুর থেকে শুরু হয়ে যে ভোগান্তি চলল রাত পর্যন্ত।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠনের তরফে সিএবি এবং এনআরসি-র বিরোধিতার জন্য জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। তার জেরেই ওয়েলিংটন, খিদিরপুর, বেলগাছিয়া, পার্ক সার্কাস চার নম্বর সেতু ও পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তা অবরোধ করে সংখ্যালঘুদের সংগঠন। একই সঙ্গে ধর্মতলা থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল যায় ময়দানে গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত। সেখানেই জমায়েত শুরু করে তারা।

ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর থেকে যে অবরোধ শুরু হয়েছিল পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে, তা ছড়িয়ে পড়ে খিদিরপুর ও বেলগাছিয়াতেও। পার্ক সার্কাসের ওই অবরোধের ফলে দক্ষিণ, মধ্য এবং পূর্ব কলকাতার একটা বড় অংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। যার রেশ এসে পড়ে ধর্মতলা, বি বা দী বাগ থেকে শুরু করে খিদিরপুর ও বিবেকানন্দ সেতুতেও। বাদ যায়নি ইএম বাইপাস, এ জে সি বসু রোডও। একই অবস্থা হয় বেলগাছিয়া রোড-সহ সমস্ত এলাকার ছোট-বড় রাস্তার।

Advertisement

আরও পড়ুন: কর্মস্থলে ‘যৌন হেনস্থা’, বিচারকের দ্বারস্থ মহিলা

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে। সেই আন্দোলনের আঁচই বৃহস্পতিবার কিছুটা পড়েছিল এ রাজ্যে। শুক্রবার তা ছড়িয়ে পড়ে মহানগরেও।

ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে অবরোধের ফলে মা এবং এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। দুই উড়ালপুলের দু’দিকে গাড়ি দাঁড়িয়ে যাওয়ার ফলে বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে ওই দুই উড়ালপুলে উঠতে পারেনি কোনও গাড়ি। ফলে গাড়ির লম্বা লাইন এক দিকে হেস্টিংস মোড় থেকে অন্য দিকে ইএম বাইপাস ছাড়িয়ে যায়। শুধু উড়ালপুলের উপরেই নয়, নীচের রাস্তাতেও গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়। পার্ক স্ট্রিটে গিয়েও দেখা যায়, সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে মল্লিকবাজারমুখী গাড়ির সারি।

হাওড়ায় ট্রেন ধরতে যাবেন বলে বালিগঞ্জ থেকে বেরিয়েছিলেন মাধব দাস। পার্ক সার্কাসের কাছে বেকবাগান থেকে এ জে সি বসু রোড উড়ালপুল ধরে ধর্মতলা হয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরিয়েই তিনি আটকে পড়েন। ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় তিনি হাওড়া পৌঁছন অনেক ঘুরপথে।

লালবাজার জানিয়েছে, দুপুর থেকে অবরোধের ফলে গোটা সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মেয়ো রোড, খিদিরপুর রোড, রেড রোড, এ জে সি বসু রোডে ব্যাহত হয় যান চলাচল। প্রায় দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা ওই অবরোধের ফলে হাজরা ও ভবানীপুরের দিক থেকে হাওড়া এবং বি বা দী বাগমুখী গাড়ি সোজা ধর্মতলা দিয়ে পাঠানো হয়েছে। একই ভাবে প্রচুর গাড়িকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে হেস্টিংস ও স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে। সিআইটি রোডের গাড়ি ঘুরিয়ে পাঠানো হয়েছে এসএন ব্যানার্জি রোড দিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন