মেট্রো-পথে বাধা সরাতে সহায় পাইলট সুড়ঙ্গ

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৩
Share:

ভিড় রাস্তায় ভিআইপি-দের যাতায়াতের পথ করে দেয় ‘পাইলট কার’। এ বার ধর্মতলায় মাটির নীচে বাধা সরিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গকে পথ দেখাবে ‘পাইলট টানেল’। শুক্রবার, গণেশ পুজোর দিনে শুরু হয়েছে ওই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ।

Advertisement

গঙ্গা পেরিয়ে গত মার্চ মাসেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জো়ড়া সুড়ঙ্গ ধর্মতলায় পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেই এসপ্ল্যানেড স্টেশন থেকে শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত সুড়ঙ্গ তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মাটির প্রায় ৩০ মিটার গভীরে লুকিয়ে থাকা পাঁচটি এইচ আকৃতির ইস্পাতের স্তম্ভ (স্টিল জয়েস্ট)। ওই বাধার জেরেই প্রায় মাস পাঁচেক ধরে থমকে ছিল সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। মূল সুড়ঙ্গের পথের আশপাশে রয়েছে আরও চারটি স্তম্ভ।

চার দশক আগে কলকাতা মেট্রো রেলের কাজ চলার সময়ে এসপ্ল্যানেড স্টেশন তৈরি করতে এস এন ব্যানার্জি রোড এবং রানি রাসমণি রোডের মধ্যে সংযোগের জন্য ইস্পাতের পাত দিয়ে রাস্তা (আয়রন ডেক রোড) তৈরি করা হয়েছিল। সাময়িক ভাবে ওই রাস্তার ভার ধরে রাখার জন্যই স্তম্ভগুলি মাটির তলায় বসানো হয়। মেট্রো স্টেশন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে ওই স্তম্ভগুলিকে আর সরানো হয়নি।

Advertisement

মাস কয়েক আগে শিয়ালদহমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার জন্য ধর্মতলা এলাকায় নতুন টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) নামানো হয়। তার পরেই ধরা পড়ে, জোড়া সুড়ঙ্গের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওই পাঁচটি ইস্পাতের স্তম্ভ। কয়েক মাস ধরে বিস্তর মাথা ঘামিয়ে একটি বিদেশি সংস্থার তত্ত্বাবধানে অবশেষে স্তম্ভগুলি কেটে সুড়ঙ্গ তৈরির উপায় বার করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

কী সেই উপায়? ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জোড়া সুড়ঙ্গের জন্য নির্ধারিত পথের মাঝে আর একটি ৩.৫ মিটার ব্যাসের সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে মাটির গভীরে প্রায় ৮০ মিটার এগোলে ওই স্তম্ভগুলি পাওয়া যাবে। ওই দূরত্ব পর্যন্ত পৌঁছতেই কাটতে হবে আশপাশের ওই চারটি স্তম্ভ। তার পরে আরও তিনটি শাখা সুড়ঙ্গ তৈরি করে কেটে পরিষ্কার করা হবে মূল সুড়ঙ্গের পথে থাকা বাকি পাঁচটি স্তম্ভকে।

এক মেট্রো কর্তা জানান, ‘পাইলট টানেল’ তৈরি করে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ এবং সময়সাপেক্ষ। ধস ঠেকানোর জন্য যাবতীয় সতর্কতা নিয়ে ধীরে ধীরে পাইলট সুড়ঙ্গ তৈরি করতে হবে। তার পরে ওই সুড়ঙ্গ পথে মেট্রো কর্মীরা গিয়ে ইস্পাতের স্তম্ভ কেটে ফেলবেন। উপরে কলকাতা মেট্রোর চলাচল অক্ষুণ্ণ রেখেই এই কাজ করতে হবে।

পৃথিবী জুড়ে স্বীকৃত ‘নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথড’ (এনএটিএম) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই কাজ শুরু হয়েছে। খুব ছোট আকারের ‘এক্সক্যাভেটর’ ব্যবহার করে আর্চের আকারের সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। প্রতি দেড় মিটার সুড়ঙ্গ তৈরি করার পরে তা পরীক্ষা করে আবার এগোতে হচ্ছে মেট্রো আধিকারিকদের। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। পাইলট সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হলে তবেই শিয়ালদহমুখী জোড়া সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করতে পারবে টিবিএম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন