আকাশে মেঘ ছিল। আশঙ্কা ছিল দুর্যোগের। মুম্বই থেকে কলকাতায় আসার পথে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়েও দিতে হতে পারত বিমানকে।
সেই কারণে, অতিরিক্ত জ্বালানি নিতে হয়েছিল এয়ারবাস ৩২১ বিমানকে। বিমানের ১৬৮টি আসনও ছিল ভর্তি। বাধ্য হয়ে বিমানের ওজন কমাতে যাত্রীদের অনেকেরই মালপত্র মুম্বইয়ে ফেলে উড়ে আসতে হয়েছিল।
ফলস্বরূপ, সোমবার রাতে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানের চাকা কলকাতার মাটি ছোঁওয়ার পরে এক ঘন্টা কনভেয়ার বেল্টের সামনে অপেক্ষা করতে হয় বিবেক কোঠারিকে। হাতে পান ৬টি ব্যাগের একটি। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিমানটি কলকাতায় পৌঁছোয় এবং লেকটাউনে তাঁর বাড়ি ফিরতে দেড়টা বেজে যায়। কনভেয়ার বেল্টের সামনে তিনি যখন ব্যাগের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন চারপাশে চেয়ে দেখেন তাঁর মতো আরও বহু যাত্রী হা-পিত্যেশ করে অপেক্ষা করছেন ব্যাগের জন্য। একসময়ে অসন্থোষ বাড়তে শুরু করে যাত্রীদের। বিবেকবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমরা চিৎকার শুরু করতে এয়ার ইন্ডিয়ার এক অফিসার এসে মুম্বইয়ে ফোন করেন। সেই ফোনের কথোপকথন থেকে আমরা বুঝতে পারি কিছু জিনিষপত্র পণ্য হিসেবে মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয় ওই উড়ানে। সেই কারণেই নাকি আমাদের মালপত্র আনা সম্ভব হয়নি।’’
এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে এ দিন বলা হয়েছে, অন্য কোনও পণ্য নয়। অতিরিক্ত জ্বালানি নেওয়ার জন্যই এই বিপত্তি। সব মিলিয়ে ৩৬ জন যাত্রীর ৫২টি ব্যাগ আসেনি বলে বিমানসংস্থা জানিয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুম্বই-কলকাতার এই বিমানে এমন বেশ কিছু যাত্রী ছিলেন, যাঁরা সোমবার সকালে বিদেশ থেকে মুম্বই এসে নামেন। বিবেক নিজেই দুবাই থেকে সোমবার ভোরে মুম্বই নামেন। রিয়াধ থেকে মুম্বই ঘুরেও অনেকে এই বিমানে কলকাতায় পৌঁছোন। মালপত্র না পেয়ে যাত্রীরা বিমানসংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সংস্থার তরফে যাত্রীদের জানানো হয়, মঙ্গলবার সকালে মুম্বই-কলকাতা উড়ানে সমস্ত মালপত্র নিয়ে আসা হবে। যাত্রীদের অনেকেরই জামশেদপুর, রাঁচি, মেদিনীপুর ফেরার কথা ছিল বলে বিবেক এ দিন জানান। ফলে, সোমবার রাতে একবার নিজেদের গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার পরে তাঁদের পক্ষে এতটা রাস্তা পেরিয়ে আবার কলকাতা বিমানবন্দরে ফেরা সম্ভব নয় বলেও সেই সব যাত্রীরা জানান। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এমন কিছু যাত্রীর জন্য রাতে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁরা এবং শহর থেকে আরও অনেক যাত্রী মঙ্গলবার সকালে বিমানবন্দরে গিয়ে ব্যাগ ফেরত পেয়েছেন। বিমানসংস্থা জানিয়েছে, অনেককেই বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মালপত্র।