গান বাজানো নিয়ে গোলমাল কসবায়

পাড়ার সরস্বতী পুজোয় জোরে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কসবা এলাকার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোড। অভিযোগ, প্রতিবাদ করতে গিয়ে ‘নিগৃহীত’ হতে হয়েছে এক তরুণীকে। আবার ঘটনায় তরুণীর বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ রয়েছে, তিনি সময়মতো পুলিশকে কিছু না-জানিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩
Share:

পাড়ার সরস্বতী পুজোয় জোরে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত কসবা এলাকার শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোড। অভিযোগ, প্রতিবাদ করতে গিয়ে ‘নিগৃহীত’ হতে হয়েছে এক তরুণীকে। আবার ঘটনায় তরুণীর বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ রয়েছে, তিনি সময়মতো পুলিশকে কিছু না-জানিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন থেকেই দু’টি উফার লাগিয়ে সুস্মিতার বাড়ির সামনেই গান বাজাচ্ছিল এলাকার কিছু কিশোর। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছেলেগুলির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিযোগকারিণী, বছর বত্রিশের সুস্মিতা রায়। পুলিশ জানিয়েছে, অন্তত সাত বছরের সাজার মতো অভিযোগ না-পেলে এফআইআর দায়ের করা যায় না। আবার তরুণীর যে অভিযোগ, তাতে সাত বছরের সাজা হয় না। তাই নাবালক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জেনারেল ডায়েরি করেছে পুলিশ। তাকে জুভেনাইল কোর্টে নিয়ে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুস্মিতা জানান, শরৎ ঘোষ গার্ডেন রোডের একটি দোতলা বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে থাকেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, সরস্বতী পুজোর সকাল থেকে খুব জোরে মাইক বাজিয়ে গান শুরু হয় তাঁর বাড়ির নীচেই। তিনি পুজো আয়োজকদের অনুরোধ করেন গানের আওয়াজ একটু কমাতে। তাঁর বৃদ্ধ ও অসুস্থ বাবা-মায়ের অসুবিধা হচ্ছে। সুস্মিতার অভিযোগ, অনুরোধের পর গান থামা দূরের কথা, আওয়াজও এতটুকু কমানো হয়নি।

Advertisement

পুজোর পরের দিন বৃহস্পতিবারও সারা দিন গান চলেছে বলে দাবি সুস্মিতার। পুলিশ জানায়, তিনি পুজোর জায়গায় গিয়ে, যে ফোনটি উফারে লাগিয়ে গান বাজানো হচ্ছিল, সেটি খুলে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেন। তাতে মোবাইলটি ভেঙে যায় বলে অভিযোগ।

এ কথা অস্বীকার করেননি সুস্মিতা নিজেও। তাঁর দাবি, এর পরে ওই ছেলেরা ঘিরে ধরে তাঁকে। অশ্লীল ভাষায় গালাগাল ও বচসা শুরু হয়। এর মধ্যে একটি ছেলে সুস্মিতাকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। সুস্মিতার দাবি, তাঁর ঘর লক্ষ করে ইট ছুড়তে শুরু করে ছেলেগুলি।

স্থানীয় কিশোরদের অবশ্য দাবি, সুস্মিতার গায়ে হাত দেওয়া হয়নি। উল্টে সুস্মিতাই এসে তাদের এক জনের মোবাইল ভেঙে দেন ও চড়ও মারেন। এর পরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সুস্মিতার বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে যায় ছেলেরা। সুস্মিতার অবশ্য পাল্টা দাবি, চড় তিনি মারেননি। সুস্মিতার অভিযোগ, এর পর ন’টা থেকে বার চারেক ১০০ ডায়াল করে অভিযোগ জানালে রাত এগারোটা নাগাদ কসবা থানা থেকে দু’জন পুলিশকর্মী এসে পৌঁছন। সুস্মিতা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয়েরা জানান, কিশোরদের গান বাজানোকে কেন্দ্র করে এত বড় পুলিশি ঝামেলার কোনও দরকার ছিল না। নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নিলেই ভাল হতো। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘গোটা ঘটনাটি তো সময় মতো আমাদের জানানোই হয়নি। ওই তরুণী আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে, তার পর পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছেন।’’ সুস্মিতার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে পুলিশি ঝামেলা চাইনি বলেই প্রথমে পুলিশকে জানাইনি, ওদের ভদ্র ভাবে অনুরোধ করেছিলাম গানের আওয়াজ কমাতে। তাতেও কাজ না হওয়ায় মোবাইল কেড়ে নিতে বাধ্য হই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন