অভিযোগকারিণী মহিলা। নিজস্ব চিত্র।
ভর সন্ধ্যায় মহিলার গালে চড় মারার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে পার্ক স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন শবরী বসু নামে ওই মহিলা।
দক্ষিণ কলকাতার ওই বাসিন্দা পার্ক স্ট্রিটের এপিজে হাউসে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। বৃহস্পতিবার শবরী জানিয়েছেন, অফিস শেষে প্রতি দিনই অ্যাপ ক্যাব বুক করে বাড়ি ফেরেন তিনি। তাঁর তিন সহকর্মীর বাড়িও একই দিকে। সে কারণে একটি ক্যাব বুক করে তাঁরা তিন জন ফেরেন। অন্য দিনের মতো বুধবার সন্ধ্যাতেও শবরী অ্যাপ ক্যাব বুক করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ক্যাবটি এসে পার্ক স্ট্রিটের উপর দাঁড়াতে গেলে সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মী বারণ করেন।’’ তিনি জানান, এর পর ক্যাবটি পার্ক হোটেলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় তাঁরা ক্যাবটি দেখতে পান। ক্যাব ধরার জন্য এগোনোর সময় তাঁরা খেয়াল করেন, সেই পুলিশ কর্মী ফের সেটিকে এগিয়ে যেতে বলছেন। শবরী বলেন, “আমি তখন রীতিমতো ছুটছি। ক্যাবের ড্রাইভারও আমাদের দেখতে পেয়ে গাড়িটা খুব ধীর গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই পুলিশ কর্মী তখন একটা লাঠি নিয়ে এগিয়ে যান। আমি ক্যাবের নাগাল না পেয়ে ওই পুলিশ কর্মীকে পেছন থেকে ডেকে বলার চেষ্টা করি যে, আমরা ওটায় উঠব। তিনি শুনতে না পাওয়ায় তাঁর পিঠে হাত দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করি।” শবরীর অভিযোগ, পিঠে হাত দিয়ে ডাকামাত্রই ওই পুলিশ কর্মী ঘুরে আচমকা তাঁর গালে সপাটে চড় মারেন। তিনি বলেন, “আচমকা চড় খেয়ে আমি পড়ে যাই। আমার সহকর্মীরা আমাকে ধরেন।”
তত ক্ষণে পথ চলতি মানুষও দাঁড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা ওই ট্রাফিক পুলিশ কর্মীর চড় মারার প্রতিবাদ করেন। শবরীর অভিযোগ, “এর পরেও ওই পুলিশ কর্মী ক্ষমা চাওয়ার বদলে পাল্টা হুমকি দিতে থাকেন। বলেন, কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীর গায়ে হাত দেওয়ার জন্য আমাকে গ্রেফতার করা হবে। আমার কাছে ডিসি ট্রাফিক সন্তোষ পাণ্ডের নম্বর ছিল। আমি তাঁকে সরাসরি ফোন করে ঘটনাটি জানাই। তার কিছু ক্ষণ পরেই পার্ক স্ট্রিট থানা থেকে পুলিশ কর্মীরা এসে আমাকে থানায় নিয়ে যান। সেখানে আমি অভিযোগ দায়ের করি।”
আরও পড়ুন: ‘মেয়েটা কিন্তু ভাল থাকতেই চেয়েছিল’
আরও পড়ুন: মত্ত চালকদের বাগে আনতে রোজ অভিযান
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে কলকাতার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতীম সরকার ফোন করে শবরীর কাছে গোটা ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালেদও কথা বলেছেন শবরীর সঙ্গে। অভিযোগ পাওয়ার পরই ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পাশাপাশি বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে অভিযুক্ত ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর হারান মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)