প্লাস্টিকের দানার বস্তা-সহ ধৃত সুরজিৎ ও ফিরোজ। নিজস্ব চিত্র
আবু ধাবি থেকে বস্তা ভর্তি প্লাস্টিক দানা নেমেছিল কলকাতা বন্দরে। যাওয়ার কথা ছিল মহেশতলার এক ব্যবসায়ীর কাছে। কিন্তু মাঝপথেই সেই মাল উধাও হয়ে যায়। পুলিশ শুধু জানতে পেরেছিল, বস্তার গায়ে আরবি ভাষায় কিছু লেখা আছে। সেই সূত্র ধরেই ওই দানা বিক্রিবাটার সময়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা থেকে শনিবার পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশ হাতেনাতে গ্রেফতার করল দু’জনকে। কিন্তু তত দিনে ১০০ ব্যাগের মতো দানা বিক্রি করে দিয়েছে ধৃতেরা।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম সুরজিৎ সিংহ ওরফে রাজু এবং শেখ ফিরোজ। দু’জনেই ফলতার বাসিন্দা। ধৃতদের আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন অরবিন্দ মিশ্র নামে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর আবু ধাবি থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের প্লাস্টিক দানা কন্টেনার বোঝাই হয়ে কলকাতা বন্দরে এসেছিল। ওই দিনই তা মহেশতলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কন্টেনারে বোঝাই করা হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে কন্টেনার পৌঁছয়নি। লরিচালক ফিরোজের মোবাইলও বন্ধ। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন অরবিন্দ। তদন্তকারীদের জানান, ওই বস্তার গায়ে আরবি শব্দ লেখা রয়েছে।
পুলিশ তদন্তে নেমে দেখে চালকের মোবাইল বন্ধ। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নির্দিষ্ট দিনে কন্টেনার সমেত লরিটি বন্দর থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখা যায়। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, কোনও সূত্র না থাকায় স্থানীয় সোর্সের উপরে জোর দেওয়া হয়। এক সোর্স কিছু দিন আগে পুলিশকে জানায়, ফলতায় এক ব্যক্তি কম দামে বিদেশি প্লাস্টিকের দানা বিক্রি করছে। বস্তার গায়ে আরবি ভাষায় লেখা রয়েছে।
এর পরেই ওই সোর্সকে নিয়ে পুলিশ হানা দেয় ফলতায়। খোঁজ মেলে লরিটির। তদন্তকারীরা ওই গাড়ির কন্টেনারে তল্লাশি চালাতেই বেড়িয়ে আসে আরবি ভাষায় লেখা দানা ভর্তি বস্তা। পাকড়াও করা হয় গাড়ির চালক ফিরোজকে। তাকে জেরা করেই রাজুর সন্ধান পান তদন্তকারীরা। রাজু ফিরোজকে ওই কন্টেনার নিয়ে পালাতে সাহায্য করেছিল বলে জেনেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরায় পুলিশ জেনেছে, ধৃতেরা ন’শো ব্যাগ দানার মধ্যে প্রায় একশোটি হাওড়া, ডায়মন্ড হারবার-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দিয়েছে।