কাটা-গ্যাসের চক্রের হদিস, গ্রেফতার ১

বেআইনি ভাবে রান্নার গ্যাস কে ‘কাটা-গ্যাস’-এ পরিণত করে ব্যবহার করা হচ্ছে অটোয় এমন অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু এ বার গ্রাহকের কাছ থেকে রান্নার গ্যাস সরাসরি কাটা-গ্যাস অপারেটরদের হাতে চলে যাওয়ার প্রমাণ পেল পুলিশ।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০০:০০
Share:

বেআইনি ভাবে রান্নার গ্যাস কে ‘কাটা-গ্যাস’-এ পরিণত করে ব্যবহার করা হচ্ছে অটোয় এমন অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু এ বার গ্রাহকের কাছ থেকে রান্নার গ্যাস সরাসরি কাটা-গ্যাস অপারেটরদের হাতে চলে যাওয়ার প্রমাণ পেল পুলিশ। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে শহর এবং শহরতলিতে অভিযান চালিয়ে যে ৬০টি গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করেছিলেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (ইবি) গোয়েন্দারা, তার বেশির ভাগই গ্রাহকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনেছিল কাটা-গ্যাসের ওই চক্রটি।

Advertisement

কী ভাবে ওই চক্রের সন্ধানপেল পুলিশ?

ইবি সূত্রের খবর, গত ২৬ মে গোয়েন্দারা জানতে পারেন গড়িয়াহাট থানা এলাকার হিন্দুস্থান পার্কের কাছে একটি বাড়িতে মজুত করা হয়েছে বেশ কিছু গ্যাস সিলিন্ডার। সেখানে হানা দিয়ে তাঁরা দেখেন, প্রায় ২০টির মতো সিলিন্ডার রাখা। যার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গ্রেফতার করা হয় সাবির মোল্লা নামে এক যুবককে। পুলিশের দাবি, তাকে জেরা করেই জানা যায় কামালগাজি থেকে ওই সিলিন্ডারগুলি নিয়ে এসেছিল সে। এর পরেই সোমবার সেখানে হানা দেয় ইবি।

Advertisement

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, কামালগাজির ওই এলাকাটি গাছ-গাছালিতে ভর্তি নির্জন। সেখানে একটি গোডাউনের ভিতরে রয়েছে প্রায় ৪০টি বেআইনি গ্যাস সিলিন্ডার। বাইরে ২টি রিফিলিং মেশিন। যা দিয়ে দাড়িয়ে থাকা একটি আটোতে গ্যাস ভরা হচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রাজা শেখ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জেরা করে কাটা-গ্যাসের বড়সড় চক্রের হদিস মিলেছে। সোনারপুর, কামালগাজি এবং নরেন্দ্রপুরে ওই চক্রটি সক্রিয়। তাকে জেরা করে ওই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মূলত যে সমস্ত গ্রাহকের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বেশি, তাঁদের থেকেই ওই সিলিন্ডার কিনে নিত চক্রটি। তা প্রথমে আনা হত গুমটিতে। পরে নিয়ে যাওয়া হত শহরতলির সোনারপুর থানা এলাকার কামালগাজিতে। সেখানে রিফিলিং যন্ত্রের মাধ্যমে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের করে তা ভরা হত অটোয়। আগে এলপিজি সরবরাহকারী বেশ কিছু সংস্থার ডিলারদের সঙ্গে যোগসাজস রেখে ওই চোরাকারবারীরা সিলিন্ডার সংগ্রহ করত। কিন্তু ওই সব সংস্থার নজরদারির ফলে চোরাকারবারিরা সরাসরি গ্রাহকদের কাছ থেকে সিলিন্ডার কেনা শুরু করে।

ধৃত যুবক তদন্তকারীদের জানিয়েছে, কিলোগ্রাম-প্রতি কাটা এলপিজি-র দাম এখন ৫০ টাকা। এখন অটোয় যে এলপিজি ব্যবহার করা হয়, বাজারে তার দাম কেজি পিছু ৪০ টাকার মতো। তা হলে কেজি-পিছু ১০ টাকা বেশি দাম হওয়া সত্ত্বেও অটোচালকেরা ‘কাটা-গ্যাস ভরেন কেন?

অটোচালকেরা জানিয়েছেন, দাম বেশি হলেও বাজারে বিক্রি হওয়া গ্যাসের চেয়ে কাটা-গ্যাসে অটো অনেক বেশি কিলোমিটার চলে। সাধারণ এলপিজিতে যেখানে কেজি-পিছু গ্যাসে অটো চলে প্রায় ২২ কিলোমিটার, সেখানে কাটা-গ্যাসে তা চলে প্রায় ৩২ কিলোমিটার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন