অনুজ শর্মা।
শহরে কোথাও গোলমাল হলে উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার।
লালবাজার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের মাসিক অপরাধ দমন বৈঠকে প্রতিটি থানার অধিকারিকদের ওই নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। সাম্প্রতিক কালে শহরে বড় কোনও গোলমালের খবর না থাকলেও ভোট মেটার পর থেকেই ছোটখাটো ঝামেলার অভিযোগ উঠেছে কসবা এবং যাদবপুর থানা এলাকায়। পুলিশের আধিকারিকদের মতে, কমিশনার ওই বার্তার মধ্য দিয়ে পক্ষপাতহীন ভাবেই বাহিনীকে কাজ করতে বলেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করছেন, দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নিলে বড় গোলমাল এড়ানো সম্ভব।
এ দিনের বৈঠকে দাগি অপরাধীদের ধরার ব্যাপারেও বাহিনীকে সক্রিয় হতে বলেছেন সিপি। প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের আগে দাগিদের ধরার ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছিল লালবাজারের বিরুদ্ধে। ভোটের আগে ওই অপরাধীদের ধরা ও তাদের নজরবন্দি করার জন্য যাতে কলকাতা পুলিশ সক্রিয় হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তার পরেই ধরা হয় কয়েক জন দাগিকে। পুলিশকর্মীদের অনুমান, কুখ্যাত অপরাধী ধরার ব্যাপারে কমিশনার সেই সক্রিয়তাই বজায় রাখতে চাইছেন। শহরের বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে ওই দুষ্কৃতীরাই জড়িয়ে থাকে বলে অভিযোগ। ভোট মিটে যাওয়ার পরে গত রবিবার দ্বিতীয় দফায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অনুজ শর্মা। গত মাসের প্রথম দিকে তাঁকে কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
লালবাজারের খবর, এ দিনের বৈঠকে কমিশনার আরও বলেছেন, অপরাধ ঠেকাতে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানা এবং গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এর জন্য বাড়াতে হবে নজরদারি। পাশাপাশি শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় গার্ড রেল দিয়ে গাড়ি তল্লাশি করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘শহরের নাগরিকেরা যাতে সব সময়ে প্রয়োজনে পুলিশকে পাশে পান, সেটাই চান কমিশনার। তাই তিনি পুলিশকর্মীদের আরও বেশি সংখ্যায় পথেঘাটে থাকতে বলেছেন।’’
লালবাজার জানিয়েছে, শুধু অভিযুক্তকে ধরাই নয়, দ্রুত অপরাধের কিনারা করার উপরেও এ দিন জোর দিয়েছেন অনুজ। যাতে উপযুক্ত সাজা পান অভিযুক্তেরা। এ দিনের বৈঠকে তিনি গোয়েন্দা বিভাগের ডাকাতি শাখার আধিকারিকের প্রশংসা করেন লেক থানার একটি ছিনতাইয়ের কিনারা করার জন্য। মাসখানেক আগে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে এক অ্যাপ-ক্যাব চালকের ফোন এবং টাকা ছিনতাই করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনার উল্লেখ করে অভিযুক্তদের সাজা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে এ দিনের বৈঠকে।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের ঘটনায় অভিযুক্তেরা রাজাবাজার এবং নারকেলডাঙা থানা এলাকার বাসিন্দা। ছিনতাইবাজেরা পুলিশের খাতায় ‘গুন্ডা’ হিসেবে পরিচিত। তাই তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার জন্য গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখার এসি-কে নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। মূলত ছিনতাই দমন শাখা বা ওয়াচ বিভাগ ওই বিষয়টি দেখলেও কমিশনার চান, সেটি দেখুক গুন্ডা দমন শাখা।