COVID Restriction

‘অকাজে’ পথে কারা? স্পষ্ট নির্দেশিকা না থাকায় নিজেরাই ‘বুঝেশুনে’ পদক্ষেপ করছে পুলিশ

গত ১৫ দিনে প্রশাসনিক কড়াকড়ির মধ্যে অকাজে পথে নামা মোট ৩৩ হাজার ২২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২১ ০৬:৫৪
Share:

ফাইল চিত্র

কিছু বিধিনিষেধ থাকলেও বুধবার থেকে খুলে গিয়েছে শহরের শপিং মল ও পানশালাগুলি। খোলা রাখার সময়সীমা বেড়েছে রেস্তরাঁর। বাজার ও মুদির দোকানের পাশাপাশি বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকতে পারবে অন্যান্য দোকানও। কিন্তু এই সব গন্তব্যে যাওয়ার জন্য পথে নামলে পুলিশ ধরবে না তো? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নানা মহলে। এ নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই পুলিশেরও। কারণ, নতুন ছাড়ের তালিকায় থাকা কোনও গন্তব্যে যাবেন বলে কেউ পথে নামলে তাঁর সঙ্গে কী করা হবে, সেই সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এ দিন রাত পর্যন্ত জারি করা হয়নি লালবাজারের তরফে। ফলে, পুলিশকর্মীরা নিজেরাই ‘বুঝেশুনে’ পদক্ষেপ করার পথে হাঁটছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৫ দিনে প্রশাসনিক কড়াকড়ির মধ্যে অকাজে পথে নামা মোট ৩৩ হাজার ২২০টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। গত বছরের লকডাউনের সময়ে যত গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, এ বারের সংখ্যাটা তার চেয়েও অনেক বেশি। ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশের বক্তব্য, গত বছরের তুলনায় এ বার অনেক বেশি ছাড় ছিল। সেই ছাড়ের ফাঁক গলে বেরিয়ে পড়া যাবে ভেবেই অনেকে অকাজেও গাড়িতে করে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তাঁদেরই ধরে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু এ দিন থেকে যে নতুন ছাড় চালু হয়েছে, তার পরে গাড়ি ধরা অনেকটাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াল বলে ট্র্যাফিক পুলিশের অনেকের বক্তব্য।
যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিক বললেন, “এ বার যদি কেউ শপিং মলে যাচ্ছেন বলে রাস্তায় নেমে পড়েন, তাঁকে আটকাব কী করে?” বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিকের আবার মন্তব্য, “এর পর থেকে আদতে আর কোনও নিয়ন্ত্রণই থাকল না। যে কেউ যে কোনও কারণে পথে বেরিয়ে ধরা পড়লেই বলবেন, রেস্তরাঁ, বার বা শপিং মল থেকে ফিরছেন।” এ দিন দিনভর হলও তা-ই।
নিউ মার্কেট চত্বরে কর্মরত এক ট্র্যাফিককর্মীর অভিযোগ, “রাত ৯টা নাগাদ একটি গাড়িতে সাত জন বন্ধু ফিরছিলেন। দাঁড় করাতেই এক জন শপিং মল থেকে ফেরার কথা বললেন। আর অন্য দু’জন রেস্তরাঁয় খেয়ে ফেরার কথা জানালেন। পরিষ্কার মিথ্যে বলা হচ্ছে বুঝেও ধরার উপায় ছিল না। ই-পাস নেই বলে যে ব্যবস্থা নেব, তারও উপায় নেই। কারণ, নতুন যে যে বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেগুলি তো আমরাই এখনও ই-পাসের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারিনি।”
এত দিন জরুরি কাজে বেরোনো ব্যক্তিদের পুলিশের তরফে ই-পাস দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। coronapass.kolkatapolice.org-এ গিয়ে প্রয়োজনের কথা জানিয়ে সেই পাস পাওয়া যেত। যদিও নতুন ছাড়ের ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে, সেই ওয়েবসাইট আপডেট করা হয়নি। এখনও শুধু নির্মাণ সংস্থার কর্মী, ওষুধ, খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, বেসরকারি অফিস, সাধারণ দোকান এবং ই-কমার্স সংস্থার কর্মীদের জন্যই এই পাস পাওয়ার সুযোগ রয়েছে সেখানে।
লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক আধিকারিক অবশ্য বললেন, “দ্রুত ওয়েবসাইট আপডেট করা হবে। নতুন যে যে ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে, সেগুলি তাতে যুক্ত করা হবে। যদিও সকলেই যে ই-পাস পাবেন, তা নয়।”
ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, বেসরকারি অফিসের কর্মীর ক্ষেত্রে তাঁকে যে সংস্থার তরফে অফিস করতে বলা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত নথি দেখাতে হবে। উড়ান ধরতে যাওয়ার পথে পুলিশ আটকালে দেখাতে হবে টিকিট। রেস্তরাঁ বা শপিং মলের কর্মীদের দেখাতে হবে প্রতিষেধক নেওয়ার নথি। একই বিধি কার্যকর করা হতে পারে অন্য দোকানে কাজ করা কর্মীদের ক্ষেত্রেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন