ট্যাংরার পুলিন খটিক রোডে গত ২৩ মার্চ এক যুবককে গুলি করার ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল বাবলু নামে আর এক যুবকের দিকে। এন্টালির মতিঝিল বস্তির বাসিন্দা বাবলু এলাকায় মাদক ও অস্ত্রের কারবার চালাত বলে অভিযোগ। ট্যাংরার ঘটনার পরে কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল সে। বাবলু যে ফের শহরে ফিরে এসেছে, বুধবার তার প্রমাণ পেল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে পুলিন খটিক রোডে রেললাইনের ধারে চোলাইয়ের দোকানে আসে বাবলু। মোহন খটিক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা ওই ঠেক চালান। সেখানে বসে ছিল মতিঝিল বস্তিরই বাসিন্দা কালো ও বাপি নামে বাবলুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দুই যুবক। শত্রুকে বাগে পেয়ে কালো ও বাপি বাবলুকে আটকে রাখে। তখন বাবলু নিজেকে বাঁচাতে পকেট থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে দু’রাউন্ড গুলি চালায়। ভয় পেয়ে কালো ও বাপি পালিয়ে যায়। পরে ফিরে এসে বাবলুকে আশ্রয় দেওয়ার ‘অপরাধে’ তারা মোহনকে মদের বোতল ও রিভলভারের বাট দিয়ে মারে। মাথা ফেটে যায় মোহনের। এনএরএস হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে।
একটি সূত্রের খবর, বাবলু পুলিশের একাংশের ‘সোর্স’ বলে বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে একই এলাকায় গুলি চালানোর দু’টি ঘটনা ঘটলেও পুলিশ অভিযুক্তের নাগাল না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ট্যাংরার দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডের বাসিন্দা মহম্মদ জুরমান বাবলুর অস্ত্র ও মাদকের কারবারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাই গত ২৩ মার্চ বাবলু জুরমানের পায়ে গুলি চালায়। ওই ঘটনার পরে জুরমানের পরিবার এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ বাবলুকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান বিশাল গর্গ অবশ্য বলেন, ‘‘বাবলুকে ধরতে আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ২৩ মার্চের ঘটনার পরে বাবলু বিহারে গা-ঢাকা দিয়েছিল। দিন দুই আগে সে শহরে ফেরে। বিহারে, কলকাতায় দাপিয়ে বেড়ালেও কেন পুলিশ তাকে ধরতে পারছে না, সে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। এক জনের কথায়, ‘‘এ কোন শহর, যেখানে এক জন বারবার গুলি চালিয়েও অধরা থেকে যাচ্ছে?’’ শহরে কত বেআইনি অস্ত্র মজুত রয়েছে, এই ঘটনায় সে প্রশ্নও উঠেছে।