পানু দাস
হাওয়ায় ভাসছে নানা নাম। এক এক জনের এক এক রকম বয়ান। মিল নেই অধিকাংশের মধ্যে। কে ঠিক, কে ভুল? বলবে সময়। অপাতত তথ্যের ভিড়ে, ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে রহস্য।
নিউ আলিপুর হত্যাকাণ্ডে নিহত বৃদ্ধ মলয় মুখোপাধ্যায়ের কোনও অ্যাটাচিই ছিল না বলে এ বার দাবি করলেন তাঁর দিনের বেলার আয়া পানু দাস। তাঁর দাবি, মলয়বাবুর একটি চামড়ার ফোলিও ব্যাগ ছিল। ওই ব্যাগেই তিনি নগদ টাকা ও ব্যাঙ্কের সব নথি রাখতেন। ব্যাগটি সর্বক্ষণ সঙ্গে রাখতেন বৃদ্ধ।
প্রায় সাত বছর ধরে ওই বাড়িতে কাজ করছেন পানু। মূলত মলয়বাবুর মা প্রীতিদেবীর দেখাশোনার জন্য মহেশতলার ময়নাগড়ের মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা পানুকে নিয়োগ করা হয়েছিল। মাস দেড়েক আগে প্রীতিদেবীর মৃত্যুর পরেও তাঁকে কাজে বহাল রাখা হয়। ৫ অগস্ট মলয়বাবুকে খুনের পরে একটি অ্যাটাচি খোয়া যাওয়ার কথা উঠেছিল। কিন্তু পানুর দাবি, তেমন কোনও অ্যাটাচি ছিলই না। যা ছিল, তা হল এই ব্যাগ।
তদন্তকারীরা জানান, ৬ অগস্ট দুই ব্যক্তি কাকদ্বীপে সুশান্ত নামে এক মোটরভ্যান চালককে মলয়বাবুর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া দু’টি মোবাইলের একটি বিক্রি করে। সুশান্তের বয়ান অনুযায়ী, ওই দু’জনের কাছে কয়েকটি কাপড়ে বাঁধা বোঁচকা ছিল। কিন্তু কোনও অ্যাটাচি তিনি দেখেননি বলেই দাবি। কাকদ্বীপে মোবাইল বিক্রি করা ওই দু’জন এই খুনে জড়িত বলে প্রায় নিশ্চিত তদন্তকারীরা। তাই সুশান্তকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই দু’জন কোথায় নেমে গিয়েছিল, তা দেখা হচ্ছে। খোঁজা চলছে অন্য ফোনটিরও।
ইতিমধ্যেই রাতের আয়া কবিতা দাস ও তার ছেলেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কবিতার ছেলে তারক প্রায় রোজই গাড়ি সাফাই করতে মলয়বাবুদের বাড়িতে যেত। গত বৃহস্পতিবার থেকে কবিতাকে কাজে যেতে নিষেধ করা হয়েছে ওই বাড়ি থেকে।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, মলয়বাবু গান-বাজনা করতেন।
নিজে গান লিখতেনও। তাঁর দেড়তলার ঘরে পরিচিতরা নিয়মিত যাতায়াত করতেন। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁদেরও। গোয়েন্দারা এক রকম নিশ্চিত যে, মুখোপাধ্যায় পরিবারের অতি পরিচিত কেউই এই ঘটনার মূলে রয়েছেন। তাই এ বার জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে মলয়বাবুর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদেরও।