শিশুকে ‘ধর্ষণ’, পুলিশের জালে শিক্ষিকার বাবা

বছর ছ’য়েকের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করলেন না সরকারি কৌঁসুলি। বৃহস্পতিবার দুপুরে, ব্যাঙ্কশালের পকসো আদালতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০০
Share:

বছর ছ’য়েকের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করলেন না সরকারি কৌঁসুলি। বৃহস্পতিবার দুপুরে, ব্যাঙ্কশালের পকসো আদালতে। যদিও শেষমেশ জামিনের আবেদন খারিজ করে বিচারক অভিযুক্তকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

এ দিন দুপুরেই বাচ্চু ঘোষ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বড়তলা থানার পুলিশ। বাচ্চুর মেয়ের কাছে টিউশন নিতে আসত ওই শিশুকন্যাটি। সেই সময়েই বাচ্চু তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ এনেছেন শিশুকন্যার পরিবারের লোকজন। এ দিকে, বাচ্চুকে গ্রেফতার করার পরেই তাঁদের বাড়ির সামনে এসে কিছু লোক গোলমাল করছে বলে অভিযোগ শিশুটির পরিবারের। শিশুটির ঠাকুরমা বলেন, ‘‘যে ভাবে লোকজন গোলমাল করছে, তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, বড়তলা থানা এলাকার বাসিন্দা, বছর ছ’য়েকের ওই শিশু ও তার দিদি যে স্কুলে পড়ে, সেখানকারই এক শিক্ষিকার কাছ থেকে তারা টিউশন নিতে যেত। ঠাকুরমা তাদের ওই গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে দিয়ে আসতেন এবং পড়া শেষ হলে নিয়ে আসতেন। ওই মহিলার অভিযোগ, মাস ছ’য়েক আগে এক দিন নাতনিদের আনতে গিয়ে তিনি দেখেন, ছোট নাতনি সেখানে নেই। পরে জানতে পারেন, তার শৌচাগারে যাওয়ার দরকার হওয়ায় গৃহশিক্ষিকার বাবা মেয়েটিকে সেখানে নিয়ে গিয়েছেন।

Advertisement

পরিবারের দাবি, সে দিন বাড়ি ফেরার পরে রাতে ঘুমের ঘোরে চিৎকার করতে শুরু করে শিশুটি। প্রথমে বাড়ির লোকজন বুঝতে পারেননি। পরে তাঁরা খেয়াল করেন, মেয়েটি ঘুমের মধ্যেই চিৎকার করে বলছে, ‘লাগছে। আমাকে ছেড়ে দাও। আমার ব্যথা করছে।’ শিশুটির ঠাকুরমা ও পরিবারের লোকজন দেখেন, তার গোপনাঙ্গে ক্ষত। কিন্তু কী করে হল?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে তাঁদের সন্দেহ হয় ওই শিক্ষিকার বাবা বাচ্চুকে। কারণ, ওই দিন তিনিই শিশুটিকে শৌচাগারে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই ঘটনার পরেও অবশ্য দুই নাতনিকে সেই শিক্ষিকার কাছেই পড়তে নিয়ে যেতেন ঠাকুরমা। তিনি জানিয়েছেন, সন্দেহের বশে কাউকে অভিযুক্ত করা ঠিক হবে না ভেবেই চুপ করে ছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে তিনি লক্ষ করেন, দুই নাতনিকে ওই শিক্ষিকার কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় হলেই ছোট নাতনি কিছুতেই যেতে চাইছে না।

আর তখনই তাঁদের সন্দেহ দৃঢ় হয়। কিন্তু সব বুঝেও প্রথমে লোকলজ্জার ভয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হননি তাঁরা। তবে ওই শিক্ষিকার কাছে শিশু দু’টিকে পাঠানো বন্ধ করে দেয় তাদের পরিবার। কিন্তু সম্প্রতি নির্যাতিতা শিশুটির মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে শুরু করে। আর তখনই তার পরিবার ঠিক করে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পকসো আইনে মামলা রুজু করে বাচ্চুকে গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন