Mysterious Death

অন্যের ঋণের বোঝায় সর্বস্বান্ত হন ওষুধ ব্যবসায়ী

কমিশনারেট সূত্রের খবর, সাগর ও রূপার নাবালিকা কন্যার গলায় শনিবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। পুলিশকে আকারে-ইঙ্গিতে অনেক তথ্য সে দিয়েছে। পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার রাতে খাওয়ার পরেই নিজেদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে ওই পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:১৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দেনার দায় তো ছিলই। মানুষকে বিশ্বাস করে প্রতারিতও হয়েছিলেন। অন্যের ঋণের গ্যারান্টার হয়েছিলেন। কিন্তু যাঁদের গ্যারান্টার হয়েছিলেন, অভিযোগ, তাঁরা ঋণের টাকা মেটাননি। ফলে তীব্র মানসিক চাপে ছিলেন নারায়ণপুরের বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী সাগর মুখোপাধ্যায়। সেই মানসিক চাপই তাঁকে পরিবারকে শেষ করার চেষ্টা করে আত্মঘাতী হওয়ার চরম সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

Advertisement

নারায়ণপুরের একটি বহুতল থেকে শনিবার দুপুরে সাগর ও তাঁর স্ত্রী রূপার দেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনটাই জেনেছে পুলিশ। খোঁজ করা হচ্ছে, কারা সাগরকে গ্যারান্টার করেও ঋণ মেটাননি। আত্মহত্যায় প্ররোচনার একটি মামলাও রুজু করতে চলেছে পুলিশ।

কমিশনারেট সূত্রের খবর, সাগর ও রূপার নাবালিকা কন্যার গলায় শনিবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। পুলিশকে আকারে-ইঙ্গিতে অনেক তথ্য সে দিয়েছে। পুলিশ জেনেছে, শুক্রবার রাতে খাওয়ার পরেই নিজেদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করে ওই পরিবার। প্রথমে তিন জনেই ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাঁদের গলায় ক্ষুর চালান সাগর। নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, সাগরের মেয়েই বাবার দোকানের এক কর্মীকে মেসেজ করে বাড়িতে ডেকে পাঠায়। সেই কর্মচারী আর এক জনকে সঙ্গে নিয়ে সাগরের ফ্ল্যাটে এসে ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। তার পরেই রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে বেরিয়ে আসতে দেখে তাঁরা আতঙ্কে চেঁচামেচি শুরু করেন। প্রতিবেশীরা তা দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সাগরের মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘর থেকে মেলে দম্পতির দেহ।

পুলিশ জানায়, সুইসাইড নোটে পরিবারের তিন জনেরই সই ছিল। নাবালিকা আদৌ সেই সই জেনে করেছে কি না, তা জানতে আগ্রহী তদন্তকারীরা। মৃত্যুর পিছনে যে বিরাট অঙ্কের দেনা রয়েছে, তা ওই নোটেই লেখা ছিল বলে কমিশনারেট সূত্রের খবর। ব্যক্তিগত ভাবে সাগর জ়িরো ব্যালেন্সে যেমন দেনা করেছিলেন, তেমনই অনের ঋণের গ্যারান্টার হন। গত দু’-আড়াই বছর ধরেই দেনায় জর্জরিত হয়ে নারায়ণপুর থানার উল্টো দিকের বাড়িটি প্রোমোটারকে বিক্রি করে তাঁর থেকে ফ্ল্যাট ও টাকা নেন তিনি। দেনার পরিমাণ পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে। সাগর যে অন্যের ঋণের গ্যারান্টার হয়ে প্রতারিত হয়েছিলেন, সুইসাইড নোট থেকেই তা জানা গিয়েছে। বাবার আর্থিক সমস্যার বিষয়ে কতটা মেয়ে জানত, সেটাও প্রশ্ন তদন্তকারীদের।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, সাগরের মা বৃদ্ধাশ্রমে থাকেন। বেহালায় রূপার এক আত্মীয় থাকেন। তাঁরাই সাগরের মেয়ের দেখাশোনা করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন