আশ্রয়: কর্মী-সমর্থকদের থাকার জন্য খাটানো হয়েছে শামিয়ানা। শনিবার, ময়দানে। নিজস্ব চিত্র
রাজনৈতিক সমাবেশের জেরে আমজনতার ভোগান্তির বিষয়টি নতুন নয়। ছুটির শহরে যানজটের আশঙ্কা কম থাকলেও আজ, রবিবার বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ ঘিরেও সতর্ক পুলিশ। তবু ছুটির শহরে চিড়িয়াখানা-পার্ক স্ট্রিট-ভিক্টোরিয়া ঘুরতে বেরোনো ভিড় ভোগান্তিতে পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা পুলিশের একাংশের।
লালবাজারের খবর, ছুটির দিনের শহরকে সচল রাখতে সমর্থকেদের নিয়ে আসা বাস, মালবাহী গাড়িগুলির পার্কিং ঠিক ভাবে করাতে শনিবার রাত থেকেই ময়দান চত্বরে থাকবে ট্র্যাফিক পুলিশ। ইনস্পেক্টরদের নেতৃত্বে পাঁচটি দল শনিবার রাত দশটা থেকেই ডিউটিতে নেমে পড়ছে। আজ, রবিবার ভোর থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হবে। নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যাতে সমাবেশের গাড়ি পার্ক না করা হয়, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য থাকছে ট্র্যাফিক পুলিশের আলাদা বাহিনীও। ছুটির দিন রাস্তা সচল রাখতে সঙ্গে থাকবেন পুলিশের কর্তারাও। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও রাস্তা দিয়ে মিছিল এলে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে যানবাহন। অর্থাৎ, মিছিলের সময়েও শহর সচল রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, ব্রিগেডের নিরাপত্তার দিকটিও মাথায় রাখা হচ্ছে। তবে ১৯ জানুয়ারির তৃণমূলের সমাবেশের তুলনায় এ দিনের সভায় ভিআইপি-র সংখ্যা কম। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও আমুল বদল ঘটেছে।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, ব্রিগেড প্যারেড ময়দানকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগ বা ‘জ়োন’-এ নিরাপত্তার দেখভালের জন্য এক জন করে পদস্থ পুলিশকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়াও, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরা সাদা পোশাকে মোতায়েন থাকবেন। মিছিলে যাতে কোনও বহিরাগত বা দুষ্কৃতী না-ঢুকতে পারে, সে দিকে নজর থাকবে। লালবাজারের খবর, সমাবেশের জন্য অতিরিক্ত কন্ট্রোল রুমও খোলা হবে। থাকবে ‘ওয়াচ-টাওয়ার’। এ ছাড়া গোয়েন্দাপ্রধানের নেতৃত্বে থাকবে পৃথক বাহিনী। সমাবেশ স্থল কিংবা জমায়েতের জায়গাতে সিসিটিভি করার কথা বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরতলি থেকে বহু বাম সমর্থক ট্রেনে চেপে হাওড়া ও শিয়ালদহে আসবেন। ওই দুই স্টেশনে রেল এবং সাধারণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ দিনই বাম সমর্থকেদের অনেকে শহরে পৌঁছে গিয়েছেন। ছুটির দিনে পথে যানজট এড়াতে অনেকেই মেট্রোর পথ বেছে নেবেন। মেট্রো স্টেশনেও তাই অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শহরের ১০টি জায়গা থেকে বড় মিছিল সমাবেশের মাঠের দিকে রওনা দেবে। ওই মিছিলগুলি নির্দিষ্ট পথ দিয়ে নিয়ে আসার জন্য পুলিশের এক-একটি দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শহরে ৩৩টি জায়গায় বামেদের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস হয়েছে। থাকছে ৩৩টি পুলিশ পিকেটও। কোনও বিপর্যয় ঘটলে দ্রুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, দমকল, ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স থাকছে। নদীতেও নজরদারি চালাবে রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ।