বাঘা যতীন-রানিকুঠি রুট

পুলিশের সঙ্গে বচসায় ‘বন্ধ’ অটো

পুজোর ছুটি শেষে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন ছিল সোমবার। সে দিনই ব্যস্ত সময়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অটো বন্ধ থাকায় থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হল বাঘা যতীন-রানিকুঠি রুটের যাত্রীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

পুজোর ছুটি শেষে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন ছিল সোমবার। সে দিনই ব্যস্ত সময়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা অটো বন্ধ থাকায় থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হল বাঘা যতীন-রানিকুঠি রুটের যাত্রীদের।

Advertisement

পুলিশের দাবি, এ দিন সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ বাঘা যতীন মোড় থেকে দু’টি অটো সিগন্যাল না মেনে ডান দিকে ঘোরে। কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ ওই দুই চালককে সিগন্যাল অমান্যের অভিযোগে কেস দেয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরেই বাঘা যতীন-রানিকুঠি রুটের কয়েকজন অটো চালকদের সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের বচসা শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গড়িয়া ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তারা। তাঁদের সামনেও অটো চালকেরা বিক্ষোভ দেখান বলে জানায় পুলিশ। ওই রুটের নিত্য যাত্রীদের অভিযোগ, এর পরেই অটো চলাচল বন্ধ করে দেন চালকেরা। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে অটো। যদিও ওই রুটের শাসক দলের ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদের দাবি, পুলিশের সঙ্গে একটা গোলমাল হলেও অটো বন্ধ হয়নি। সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। কারও কোনও অসুবিধা হয়নি।

বাঘা যতীন-রানিকুঠি রুটের তৃণমূল কংগ্রেসের ট্রেড ইউনিয়নের লাইন সম্পাদক পার্থ পাল বলেন, ‘‘আমরা বন্‌ধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তাই পুলিশের সঙ্গে আমাদের বচসা হলেও আমরা রুটে অটো চলাচল বন্ধ করিনি।’’ ওই রুটেরই ইউনিয়নের সম্পাদক তারক সরকারের বক্তব্য, ‘‘সকালে পুলিশ আমাদের দুই চালককে সিগন্যাল অমান্যের অভিযোগে কেস দেয়। এর পরে আমাদের সঙ্গে বচসা হয়। কিন্তু অটো বন্ধ করা হয়নি। রুটে অটো চলেছে স্বাভাবিক ভাবেই।’’

Advertisement

বাঘা যতীনের অটোস্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত অটোতে রানিকুঠি পৌঁছে, সেখান থেকে ফের অটো ধরে টালিগঞ্জের মেট্রো স্টেশন হয়ে ধর্মতলায় অফিসে আসেন বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা লাল্টু সরকার। বললেন, ‘‘এ দিন সকালে বাঘা যতীন অটো স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি কোনও অটো রানিকুঠি যাচ্ছে না। যাত্রীদের লম্বা লাইন হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে। কখন অটো চলবে, তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকার পরে যাদবপুর হয়ে টালিগঞ্জ পৌঁছে মেট্রো স্টেশনে যাই।’’ লাল্টুবাবুর মতো অনেক যাত্রীকেই সোমবার সকালে আচমকা অটো বন্ধ হওয়ার খেসারত দিতে হয় এই ভাবে।

বাঘা যতীন-রানিকুঠির রুটের অটো ইউনিয়ন সূত্রেই জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে এই রুটের অটো চালকদের জানানো হয়েছিল, বাঘা যতীন মোড় থেকে কোনও অটোকে ডান দিকে ঘুরতে দেওয়া হবে না। চালকেরাই জানান, রাজা সুবোধ মল্লিক রোডের একটি পরিচিত মিষ্টির দোকানের সামনে থেকে সরিয়ে বাঘা যতীন মাছ বাজারের পাশে যে ফাঁকা জায়গা রয়েছে সেখানে স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় ট্র্যাফিক পুলিশ। এলাকা সূত্রে খবর, এই দু’টি বিষয় নিয়ে তখন থেকেই ওই রুটের অটো চালকদের সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের চাপান-উতোর শুরু হয়।

সোমবার সকালে আচমকা রুটে অটো বন্ধ করার বিষয়টি সেই চাপান-উতোরেরই জের বলে চালকদের অনেকে মনে করছেন। এলাকার তৃণমূল নেতা এবং দশ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এ দিন বাঘা যতীন-রানিকুঠির রুটে অটো চলছে না বলে আমাকে ফোন করে জানান দলেরই এক ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। ইউনিয়নের নেতাদের ওই রুটে দ্রুত অটো চলাচলের ব্যবস্থা করতে বলি। এর পরেই অটো চলাচল শুরু হয়।’’

সোমবার দুপুর একটা নাগাদ বাঘা যতীন থেকে চার জন যাত্রী নিয়ে রানিকুঠি যান এক অটো চালক। সেখানে পৌঁছে চার জনের মধ্যে তিন যাত্রী দশ টাকা দিতেই ওই চালক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। যাত্রীদের ওই চালক বলেন, ‘‘সকাল থেকে আড়াই ঘণ্টা রুটে অটো চলেনি। এতো খুচরো কোথায় পাব? একটু বুঝুন!’’ তবে ওই রুটের ইউনিয়নের নেতারা কিন্তু যাত্রী ও চালকদের এই ভোগান্তির কথা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, অটো চলেছে স্বাভাবিক ভাবেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন