Kolkata Police

ডাক্তারকে ঘুসি! ক্ষমা চেয়ে মিটমাট পুলিশের

সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর) সুপ্রতীম সরকার বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ওসি দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ২২:০৫
Share:

অভিযুক্ত ওসি পুলক দত্ত এবং আক্রান্ত চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদ্দেম।—নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারির মুখে পিছু হটল পুলিশ। ঘুসিকাণ্ডে আপোসের রাস্তায় হেঁটে নিগৃহীত চিকিৎসকের কাছে ক্ষমা চাইলেন যাদবপুর থানার ওসি পুলক দত্ত। শেষ পর্যন্ত আলোচনার টেবিলেই মিটমাট হল ডাক্তার নিগ্রহ ও তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া চিকিৎসক বনাম পুলিশ লড়াইয়ের জট।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে উপনগরপাল (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদের অফিসে আলোচনায় বসে দু’পক্ষ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে সেই বৈঠক। সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুপ্রতীম সরকার বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ওসি দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

যদিও তিনি জানিয়েছেন, ওই বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার এবং ওসি-র মধ্যে ঠিক কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল, সে বিষয়ে ‘অনুসন্ধান’ চলবে। ওসি ক্ষমা চেয়ে নিলেও, এ নিয়ে নিগৃহীত চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদ্দেমের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন: মৃত শিশু প্রসব, উত্তেজনা হাসপাতালে

কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে ‘চড়’ মারার ঘটনা স্বীকার করা না হলেও, ডাক্তারকে নিগ্রহ যে করা হয়েছিল, তার উল্লেখ রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে অভিযুক্ত পুলককুমার দত্ত লিখেছিলেন, “এই কথা শুনে আমি আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনি। ভদ্রলোক একদম আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। আমার বাঁ হাতে ব্যান্ডেজ ছিল। ডান হাতে আমি ওই ভদ্রলোককে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিই।”

লালবাজার সূত্রের খবর, তিনি যে ভুল করেছেন, তা বুঝতে পেরেই বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চেয়েছেন ওসি পুলককুমার দত্ত। বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন ওই চিকিৎসকও। এমনটাই দাবি পুলিশের।

তবে কাজটা সহজ ছিল না। পুলিশ এবং চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন এই ঘটনায় তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। চিকিৎসক নিগ্রহের পর পুলিশ নিজেদের মতো যুক্তি খাড়া করতে চেয়েছে। কলকাতা পুলিশের ফেসবুকে পেজে শুধুমাত্র অভিযুক্ত ওসি-র বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। তা নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি।

অন্য দিকে, ওই নিগৃহিত ডাক্তারের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য শাখার সম্পাদক ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য শান্তনু সেন বলেন, “ওই ওসিকে গ্রেফতার করা না হলে, কোনও পুলিশের চিকিৎসা করা হবে না।”

পরিস্থিতি যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই পদস্থ পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে নিগৃহীত চিকিৎসক এবং অভিযুক্ত ওসি পুলককুমার দত্ত নিজেদের মধ্যে ‘ব্যক্তিগত’ সমস্যা মিটিয়ে নিলেন।

আরও পড়ুন: ফের মেট্রোয় ‘ঝাঁপ’, নাজেহাল যাত্রীরা

এই বৈঠকের জন্য একবালপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বাইপাসের ধারের অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল অভিযুক্ত ওসিকে। সেখান থেকে ছুটি দেওয়ার পরই আলোচনার টেবিলে বসেন তিনি।

(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন