বিষক্রিয়া কিংবা নেশার ঘোরে মৃত্যু নয়, খুন হয়েছিলেন তেঘরিয়ার বাসিন্দা, তৃণমূলকর্মী প্রসেনজিৎ দাস। তোলাবাজির বখরা নিয়ে গোলমালের জেরেই সেই খুন বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিধাননগরের গোয়েন্দাপ্রধান সন্তোষ পাণ্ডে বৃহস্পতিবার জানান, তপন নস্কর ওরফে বাপি ও সোমনাথ শ’ ওরফে বান্টি নামে ওই দুই যুবককে কৃষ্ণনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১৬ জুন বাগুইআটি থানার তেঘরিয়ায় ঘরের ভিতর থেকে প্রসেনজিতের দেহ মেলে। ঘরের দরজায় বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পরে খুনের মামলা রুজু করলেও প্রসেনজিতের মৃত্যুর কারণ অত্যধিক মদ্যপানও হতে পারে বলে মনে করছিল পুলিশ। তবে দিন কয়েক আগে এক যুবককে জেরায় পুলিশ বান্টি ও বাপির হদিস পায়।
পুলিশের দাবি, জেরায় এই খুনে সরাসরি যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ধৃতেরা। বরং ঘটনার পিছনে বান্টির বাবা রাজু শ’র সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশের দাবি, রাজু ও প্রসেনজিৎ একসঙ্গে তোলাবাজি করত। অভিযোগ, তারই বখরা নিয়ে দু’জনের গোলমাল বাধলে আলাদা হয়ে যায় সে। কিন্তু প্রসেনজিতের লোকজন রাজুর নাম করে তোলা তুলতে থাকে। পুলিশের দাবি, তা জানতে পেরে প্রসেনজিৎকে তার শাগরেদদের তোলা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে রাজু।
পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে শ্বাসরোধজনিত কারণে মৃত্যুর কথা উল্লেখ থাকায় তদন্তের মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। প্রসেনজিতের ফোন ঘেঁটে পুলিশ দেখে, ঘটনার দিন কয়েক বার বান্টির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। আরও জানা যায়, দেহ উদ্ধারের দিন থেকেই বান্টির ফোন বন্ধ। তাঁর ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন মেলে কৃষ্ণনগরে।
তদন্তকারীরা জানান, ১৫ তারিখ রাতে বান্টি ও বাপি দু’জনেই নিমতলা এলাকায় ছিলেন। রাজুই তাঁদের রঘুনাথপুরে ডেকে পাঠায়। রঘুনাথপুরে পৌঁছে বাপিকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে বান্টি রাজুর সঙ্গে দেখা করতে যান। গ্রেফতারের পরে বান্টিকে জেরায় পুলিশ জানতে পারে, বান্টি প্রসেনজিতের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রাজু এবং তাঁর সঙ্গী তৃতীয় এক ব্যক্তি প্রসেনজিতের ঘরে ঢুকে বেশ কিছুক্ষণ পরে বেরোয়। তার পরে প্রসেনজিতের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায় সকলে। ১৬ তারিখ সকালে ওই ঘর থেকেই প্রসেনজিতের দেহ উদ্ধার হয়।