Hooligans

Charaktala Disturbance: কারও ‘নির্দেশেই’ কি এলাকা ছাড়েন বাপান, দেখছে পুলিশ

এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘কে কে বাপানকে সাহায্য করেছিল, কার কার সঙ্গে ধৃতেরা যোগাযোগ করেছিলেন— সবই দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে আর কে কে এই ঘটনায় জড়িত, তা-ও খতিয়ে দেখছি আমরা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫২
Share:

ফাইল চিত্র।

বেহালার চড়কতলায় দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পরের দিন ঘটনাস্থল ছাড়তে কি কারও সাহায্য নিয়েছিলেন মূল অভিযুক্ত সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বাপান? কোনও প্রভাবশালীর নির্দেশেই কি সঙ্গীদের নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি? তদন্তে নেমে এমনই বেশ কিছু প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পুলিশের অন্দরে। ধৃতদের জেরা করে আপাতত সেগুলিরই উত্তর পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। অন্য দিকে, হাওড়ার জয়পুরের যে বাড়ি থেকে বাপান-সহ সাত জনকে ধরা হয়েছিল, এ দিন সেই বাড়ির মালিককে লালবাজারে ডেকে পাঠিয়ে ঘণ্টা দুয়েক জেরা করেন গোয়েন্দারা। পরে ওই ব্যক্তিকে বেহালা থানাতেও ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেও বেশ কিছুক্ষণ তাঁকে জেরা করে পুলিশ।

Advertisement

গত মঙ্গলবার বেহালায় দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের ঘটনার পাঁচ দিন পরে রবিবার বাপান ও তাঁর ছয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঘটনার পরদিন, অর্থাৎ বুধবার সকালেও এলাকায় ছিলেন বাপান। বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর পাল্টা অভিযোগ তুলে বেহালার মুচিপাড়া এলাকায় পথ অবরোধে মদত দিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টা দুয়েক পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে সেই অবরোধ ওঠে। তার পর থেকে বাপানকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। সূত্রের খবর, সে দিন দুপুরেই এলাকা ছেড়ে পালান তিনি।

ঠিক এখানেই সন্দেহ দৃঢ় হচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁদের প্রশ্ন, সকালে অবরোধের পরে দুপুরেই হঠাৎ করে কেন সঙ্গীদের নিয়ে এলাকা ছাড়লেন বাপান? তবে কি ‘হাওয়া’ খারাপ বুঝে প্রভাবশালী কেউ তাঁকে সেই পরামর্শ দিয়েছিলেন? এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘এমন ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই দেখা যায়, ঘটনার পরপরই এলাকা ছেড়ে পালায় অভিযুক্ত। এ ক্ষেত্রে বাপান মঙ্গলবার রাতে বা বুধবার সকালেই পালাতে পারতেন। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘোরাতে তিনি বুধবার সঙ্গীদের দিয়ে পথ অবরোধ করান। এর পরে দুপুরে হঠাৎ এলাকা ছেড়ে পালান। এ ক্ষেত্রে তাই কারও নির্দেশে তাঁর গা-ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, পরিকল্পনা মাফিকই এলাকা ছেড়েছিলেন বাপান। কিছু দিন বাইরে থাকতে হতে পারে ভেবে সঙ্গে কিছু টাকাও রেখেছিলেন। বি বা দী বাগ এলাকা থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে শহর ছাড়েন বাপান ও তাঁর ছয় সঙ্গী। প্রথমে তাঁরা যান বালিতে। সেখান থেকে বারাসত, ওড়িশার বালেশ্বর, দিঘা, খড়্গপুর হয়ে আসেন হাওড়ার জয়পুরে। প্রভাবশালী কারও কথা মতো বাপান গোটা পরিকল্পনা করেছিলেন কি না, দেখছেন তদন্তকারীরা। শহর ছাড়ার আগে তিনি কোথা থেকে টাকা জোগাড় করেছিলেন, তা-ও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ আরও জেনেছে, শহর ছাড়লেও তাণ্ডবের ঘটনার গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন বাপান। এলাকার সব খবর তাঁর কানে পৌঁছচ্ছিল। এই ক’দিনে কে বা কারা বাপানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন, তাঁদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। যদিও রবিবার আদালতে বাপান দাবি করেছিলেন, তিনি পালিয়ে যাননি। সঙ্গীদের নিয়ে চন্দনেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্তকারীদের প্রশ্ন, যদি বাপান মন্দিরে পুজো দিতেই যাবেন, তা হলে বার বার মোবাইলের সিম বদল করেছিলেন কেন?

এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘কে কে বাপানকে সাহায্য করেছিল, কার কার সঙ্গে ধৃতেরা যোগাযোগ করেছিলেন— সবই দেখা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে আর কে কে এই ঘটনায় জড়িত, তা-ও খতিয়ে দেখছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন