—ফাইল চিত্র।
গাড়ির গতি এবং মদ্যপান নিয়ে আগেই তদন্তকারীদের ধন্দে ফেলেছিলেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। এ বার দুর্ঘটনার রাতে তিনি যে সময়ের বিবরণ দিচ্ছেন, তা নিয়েও সন্দিহান পুলিশ। এ ব্যাপারে ধোঁয়াশা কাটাতে ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। শুধু তাই নয়, গাড়িতে বসেও বিক্রম-সোনিকা মদ্যপান করেছিলেন কি না, তা জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির ফরেন্সিক পরীক্ষার সময় একটি জলের বোতল মিলেছে। তাতে জলের সঙ্গে কোনও রংহীন মদ মেশানো ছিল কি না, তা জানতে বোতলটিকে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, পার্টি শেষে সুইনহো লেনে নিজের বাড়ির সামনে আধ ঘণ্টা গাড়িতে বসে মডেল-বান্ধবী সোনিকা সিংহ চৌহানের সঙ্গে গল্প করেছিলেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন বিক্রম। তার সঙ্গে দুর্ঘটনার সময় মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, ৩৫-৪০ মিনিট সময়ের ফারাক হচ্ছে। অথচ সুইনহো লেন থেকে গভীর রাতে লেক মার্কেটের সামনে পৌঁছতে অত সময় লাগার কথা নয়। তা হলে ওই মাঝের সময় তাঁরা কোথায় ছিলেন, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই গাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জলের বোতলটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোনিকার মোবাইলটিও তাঁর বাবা-মা এ দিন থানায় জমা দিয়েছেন। সেটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফোন ঘেঁটে ওই রাতে সোনিকার কথোপকথন ও মেসেজ দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। দুর্ঘটনার পর ফোনটি সোনিকার এক বন্ধুর কাছে ছিল। পরে তিনি সেটি অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্যের মারফত সোনিকার বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: ‘টনক নড়াতে টনিক দিতে হয়, পুলিশ গা বাঁচিয়ে চলবে, এটা হতে পারে না’
তদন্তকারীদের দাবি, তার পর জেরায় বহুবার বয়ান বদলেছেন ‘ইচ্ছেনদী’ ধারাবাহিকের এই নায়ক। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বেপরোয়া গতি ও মদ্যপানের কথা অস্বীকার করলেও তা পরে অসত্য বলে প্রমাণ হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। লালবাজারের এক কর্তা বলছেন, ‘‘প্রথমে উনি বলেছিলেন, ওভারটেক করতে গিয়ে একটি অন্য গাড়ি তাঁকে ফুটপাথের দিকে চেপে দিয়েছিল। পরের বার বলেন ট্রাম লাইনে গাড়ির চাকা পিছলে গিয়েছিল। তৃতীয় বার বলেন, অন্যমনস্ক হয়েই তিনি গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারান।’’
বস্তুত, বৃহস্পতিবারই বিক্রমের গা়ড়ি পরীক্ষা করে গাড়ি নির্মাতা সংস্থা ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা পুলিশকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, গাড়ির গতি স্বাভাবিকের অনেক বেশি ছিল। এ দিন পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, দুর্ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ওই জায়গায় রাস্তাটি সামান্য বাঁক নিয়েছে। ফলে বেসামাল অবস্থায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চালালে বিপদ ঘটতেই পারে।