গত কয়েক বছরে বিধাননগরে ক্রমশ বেড়েছে সাইবার অপরাধের সংখ্যা। শুধু এ দেশের নাগরিকেরাই নন, প্রতারিত হচ্ছেন বিদেশের গ্রাহকেরাও। ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এমন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ বার শিল্পতালুকের বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সংস্থাগুলির তথ্য সংগ্রহের উপরে জোর দিল বিধাননগর পুলিশ।
পুলিশ কর্তাদের দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, অভিযোগের তির বিভিন্ন বিপিও সংস্থার কিছু কর্মীর দিকে। বিভিন্ন সময়ে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁদের অনেকেই এই সব সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বা সেখানকার প্রাক্তন কর্মী। প্রতারণার একাধিক অপরাধের সমীক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে, গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত থাকছে না। বহু ক্ষেত্রে বড় প্রতারণা-চক্র ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, অনেক বেকার তরুণ-তরুণী এই সব প্রতারণা-চক্রে জড়িয়ে পড়ছেন।
পুলিশকে সবচেয়ে বেশি চিন্তায় ফেলেছে বিদেশের গ্রাহকদের প্রতারণার একাধিক ঘটনা। সেই সব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পাঁচ নম্বর সেক্টরের কিছু বিপিও সংস্থা থেকে ভিন্ দেশের গ্রাহকদের তথ্য চুরি হচ্ছে। পরে প্রযুক্তিগত পরিষেবা দেওয়ার নামে তাঁদের থেকে হাতানো হচ্ছে টাকা। পুলিশ কর্তাদের একাংশের মতে, গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেই এই ধরনের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এত দিন পাঁচ নম্বর সেক্টরের বিপিওগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিল না পুলিশের কাছে। বিধাননগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান সন্তোষ পাণ্ডে মঙ্গলবার জানান, কলসেন্টার ও বিপিও সংস্থাগুলির সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। সে জন্য ওই সংস্থাগুলিকে তাদের সবিস্তার তথ্য পুলিশকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ভাবে আন্তর্জাতিক স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি তালুকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তাতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। এমন পদক্ষেপ সারা দেশে উদাহরণ হবে।’’