পুলিশি নজরে এ বার আমরি হাসপাতাল।
লালবাজারের খবর, রোগীর সঙ্গে প্রতারণা, চিকিৎসায় গাফিলতি এবং প্রাণ সংশয় হতে পারে জেনেও আঘাত করার অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় চলতি সপ্তাহেই ওই হাসপাতালের কাছে নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। তলব করা হবে দুই চিকিৎসককেও। ওই রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি জোগাড় করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশের সঙ্গে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ জানাবেন রোগীর পরিবার।
কী অভিযোগ আমরির বিরুদ্ধে?
সূত্রের খবর, দীনকর অধিকারী নামে শান্তিপুরের এক বাসিন্দা ২৭ ডিসেম্বর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। ওই দিনই তাঁকে মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ, জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক পরামর্শ দেন, দীনকরের বাইপাস সার্জারি করতে হবে। পুলিশের কাছে দীনকরের শ্বশুর রাধারমণ লালা অভিযোগ করেন, এর জন্য দেড় লক্ষ টাকা প্যাকেজের কথা বলা হয় এবং পরের সপ্তাহেই অস্ত্রোপচারের দিন নির্দিষ্ট হয়। লালার দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথা মেনে তাঁরা সওয়া লক্ষ টাকা অস্ত্রোপচারের আগেই জমা দেন। পুলিশ জেনেছে, দু’ঘণ্টা অস্ত্রোপচার চলার পরে এক হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ওটি থেকে বেরিয়ে রোগীর পরিবারকে জানান, দীনকরের বাইপাস নয়, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করতে হবে।
পুলিশ জানায়, ওই চিকিৎসক চলে যাওয়ার পরে বাইপাসের জন্য বুকের যে অংশ কাটা হয়েছিল, তা সেলাই করে রোগীকে ওয়ার্ডে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। দীনকরের পরিবার পুলিশকে জানায়, কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দেন, বাইপাসের জন্য জমা দেওয়া টাকাতেই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হবে। অতিরিক্ত কিছু দিতে হবে না। কিন্তু পরে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি না করেই রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। এমনকী, রোগীকে ছাড়ার আগে আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে হাসপাতাল। জানুয়ারির ৯ তারিখ পুরো টাকা জমা দিয়ে দীনকরকে বাড়ি নিয়ে যায় তাঁর পরিবার। শুক্রবার দীনকরের শ্যালক জয়দেব লালা ফোনে অভিযোগ করেন, ওই হাসপাতালের গাফিলতির ফলে রোগী এখনও সুস্থ হননি।
অন্য একটি চিকিৎসায় অবহেলার ঘটনায় পাটুলির ব্যবসায়ী সুনীল পাণ্ডের মৃত্যুতে তিন চিকিৎসককে নিয়ে গঠিত কমিটির সদস্যেরা বৃহস্পতিবার পূর্ব যাদবপুর থানায় যান। সুনীলের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথি খতিয়ে দেখে তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলে কমিটি। গত মঙ্গলবার তারা মৃতের স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলে।