কলেজের হাত ধরে চাকরির স্বপ্ন দুঃস্থ ছাত্রীর

বিশাখার পরিবার অবশ্য স্বপ্ন দেখছে, নাচের স্কুলের পাশাপাশি চাকরিও করবে তাদের মেয়ে। কারণ, চলতি সপ্তাহেই তাদের পড়ুয়াদের জন্য চাকরির ইন্টারভিউয়ে বসার ব্যবস্থা করেছে মুরলীধর গার্লস কলেজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:০২
Share:

মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায়।

চার জনের সংসারে মূল রোজগেরে মা। বাবা অসুস্থ, ভারী কিছু তুলতে পারেন না। দাদা সদ্য কলেজ থেকে পাশ করে চাকরির চেষ্টায়। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসারের ঘানি টানা মাকে সাহায্য করতে তাই এখন নাচের স্কুল ‘হাতিয়ার’ বছর উনিশের বিশাখা দাসের। বাঘা যতীন রেল স্টেশন সংলগ্ন একটি ক্লাবঘর ভাড়া নিয়ে নাচের স্কুল করেছেন মুরলীধর গার্লস কলেজ থেকে সদ্য তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়া বিশাখা। ছোট-বড় মিলিয়ে এখন ওই স্কুলে মোট ১৭ জন শিক্ষার্থী।

Advertisement

ভাড়া নেওয়া ঘরের বিদ্যুতের খরচ মিটিয়ে রোজগারের বাকিটা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া মেয়ে রবিবার বললেন, ‘‘স্কুলটা করতে পেরেছি কলেজ পাশে থাকায়। কন্যাশ্রীর টাকা যখন দিনের পর দিন আটকে ছিল, তখন কলেজই আমার পাশে ছিল। আমার এই স্কুলও এক দিন আমার কলেজের মতোই বড় হবে।’’ বিশাখার পরিবার অবশ্য স্বপ্ন দেখছে, নাচের স্কুলের পাশাপাশি চাকরিও করবে তাদের মেয়ে। কারণ, চলতি সপ্তাহেই তাদের পড়ুয়াদের জন্য চাকরির ইন্টারভিউয়ে বসার ব্যবস্থা করেছে মুরলীধর গার্লস কলেজ।

কলেজের অধ্যক্ষা কিঞ্জলকিনি বিশ্বাস বলেন, ‘‘বেশ কিছু বছর ধরেই আমরা প্লেসমেন্টের ব্যবস্থা করেছি। এ বার তা এই সপ্তাহেই হচ্ছে। তা ছাড়া এই সপ্তাহটা আমাদের জন্য বিশেষ। কারণ, আগামী ২৪ এপ্রিল মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিবস।’’ এই উপলক্ষে ওই দিন বেশ কিছু কর্মসূচির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

Advertisement

ওই কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রধান ইন্দ্রাণী রাহা বলছেন, ‘‘মুরলীধরবাবু ছিলেন সংস্কৃত এবং বাংলা ভাষায় পণ্ডিত। তাঁকে বিদ্যারত্ন উপাধি দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি তা ব্যবহার করতেন না। দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতেন। মেয়েদের স্বাবলম্বী করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছিলেন।’’ সেই উদ্যোগ থেকেই ১৯১৯ সালে বালিগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠা করেন

মুরলীধরবাবু, যা এ বার একশো বছরে পা দিল। ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুরলীধর গার্লস কলেজ। জন্মদিবস উদ্‌যাপন সম্পর্কে বলতে গিয়ে অধ্যক্ষা কিঞ্জলকিনিদেবী বলেন, ‘‘বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়ার গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে এই কলেজে বিজ্ঞানের একাধিক শাখা খোলা হয়েছে। শিক্ষাবিদ মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায় যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা তা-ই পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি প্রতি দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন