পরীক্ষা দিতে এসে মৃত্যু অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর

বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে বালির নিশ্চিন্দা এলাকার একটি বেসরকারি বিএড কলেজে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম সুধা সাহা (২৫)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৯ ০১:২৯
Share:

মর্মান্তিক: সুধার দেহের সামনে তাঁর মা সুভদ্রা সাহা। বৃহস্পতিবার, হাওড়া জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

বিএড পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষাকেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল তাঁর। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে বালির নিশ্চিন্দা এলাকার একটি বেসরকারি বিএড কলেজে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম সুধা সাহা (২৫)। তাঁর বাড়ি হাওড়ার শ্যামপুরের গাদিয়াড়ায়। শ্বশুরবাড়ি স্থানীয় ৫৮ গেট এলাকায়। তিনি বালির ওই বিএড কলেজে এ দিন নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভান্সড বিএড পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। পরীক্ষা চলার সময়ে তিনি হঠাৎ অচৈতন্য হয়ে পড়েন। পরে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বালির ওই বেসরকারি বিএড কলেজে পরীক্ষা চলায় ওই এলাকাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন সুধা। সঙ্গে তাঁর মা সুভদ্রা সাহাও থাকতেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ওই তরুণীর ঝগড়া হয়। এর পরে না খেয়েই তিনি পরীক্ষা দিতে আসেন। ওই তরুণীর মা বলেন, ‘‘জামাইয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটির পরে মেয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে চাইছিল না। শেষে না খেয়েই পরীক্ষা দিতে চলে যায়। এর পরে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কলেজ থেকে আমার কাছে ওর অসুস্থতার খবর আসে।’’ এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ওই তরুণীর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে ওই কলেজের সম্পাদক বিষ্ণুপদ দাস জানান, এ দিন সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। পরীক্ষা চলছিল এসি হলঘরে। তাই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। বিষ্ণুপদবাবু বলেন, ‘‘বেলা ১২টা ২০ নাগাদ ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমাদের পরিদর্শকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গাড়ি করে বালির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। আমাদের তরফে কোনও গাফিলতি হয়নি।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, বালির ওই হাসপাতালে তরুণীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে অন্য হাসপাতালে রেফার করেন। এর পরে তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সেই তরুণীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়স্বজন ও বিএড কলেজের শিক্ষকেরা। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

প্রথমে প্রচণ্ড গরমে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে রটলেও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ময়না-তদন্তের আগে মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে তা বলা সম্ভব নয়। হাওড়া জেলা হাসপাতালের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এখনই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব নয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মারাত্মক কোনও অনিয়ম করলে এই ঘটনা ঘটতে পারে। শুনেছি ওই তরুণী এ দিন কলেজে আসার আগে খাওয়া-দাওয়া করেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন