প্রতীকী ছবি।
জ্যামার, তল্লাশি, আইন— সব আছে। নেই শুধু মোবাইল ব্যবহারে ইতি। আর সে কারণে গত দশ মাসে ৫৬৫টি মোবাইল উদ্ধার হল শুধু আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকেই!
মোবাইল ব্যবহার ঠেকাতে এক সময়ে জ্যামার বসানো হয়েছিল আলিপুর, প্রেসিডেন্সি এবং দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। কিন্তু তা-ও প্রায় অকেজো! সেই সুযোগে দিব্যি চলছে মোবাইলের ব্যবহার। সংশোধনাগারে ‘ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন ডিভাইস’ যেমন মোবাইল এবং সেই ধরনের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড হতে পারে বন্দির। গত ১ নভেম্বর থেকে এই আইন কার্যকর হয়েছে। তার পরেও সংশোধনাগার চত্বরে মোবাইল উদ্ধার বা ব্যবহারে হেরফের হয়নি।
আলিপুরে মোবাইল উদ্ধার প্রসঙ্গে কারা দফতরের দাবি, কর্তৃপক্ষ দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সে কারণে বেশি মোবাইল উদ্ধার হচ্ছে। ওয়ার্ডে ব্যবহারের সময়ে যেমন ধরা পড়েছেন বন্দিরা, তেমনই সংশোধনাগারের পাঁচিলের ধার থেকেও মোবাইল উদ্ধার করেছেন কর্তৃপক্ষ। পাঁচিলের পাশের রাস্তায় নজরদারি বাড়ালে হয়তো
মোবাইল ছুড়ে দেওয়ার প্রবণতায় কিছুটা রাশ টানা যাবে। সে কথা মেনে নিয়েও আলিপুর নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতে নারাজ কারা
দফতরের কর্তারা। তাঁদের মতে, আলিপুরের বন্দিদের বারুইপুরে নবনির্মিত সংশোধনাগারের পাশাপাশি অন্য জায়গাতেও স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে বলে
আশা করা হচ্ছে। দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বেআইনি সামগ্রী প্রবেশে আলিপুর কর্তৃপক্ষ কঠোর হওয়ায় মোবাইল উদ্ধারের সংখ্যা অনেকটাই বেশি।’’ এখন অবশ্য স্থানান্তরের কারণে তল্লাশিতে কিছুটা ছেদ পড়েছে বলে দফতরেরই একটি সূত্রে খবর।
তবে কি অন্য সংশোধনাগারে তল্লাশিতে খামতি রয়েছে? এ প্রসঙ্গে কারাকর্তাদের বক্তব্য, ‘‘তল্লাশি সব জায়গাতেই চলে।’’ যদিও আইন কার্যকর হওয়ার পরেও আলিপুরে প্রায় ২০টির মতো মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। প্রেসিডেন্সি এবং দমদমেও মিলেছে বেশ কিছু মোবাইল।
কারা দফতর সূত্রের খবর, দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়মিত তল্লাশিতে গড়ে তিন-চারটি করে মোবাইল উদ্ধার হয়। সেখানেও ওয়ার্ডের পাশাপাশি পাঁচিলের পাশে মেলে মোবাইল বন্দি বাক্স। প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের
চেহারাও প্রায় একই। সেখানে মাসে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করেন প্রায় ১৮-২০টির মতো মোবাইল।
অভিযোগ, সংশোধনাগারে মোবাইল ঢোকার পিছনে শুধু বন্দি বা তাঁদের পরিচিতেরাই নন। যোগ থাকে কারারক্ষীদের একাংশের। সে কারণে আইনে তাঁদের শাস্তির বিধানও রয়েছে। যদিও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘মোবাইল-সহ বেআইনি সামগ্রী প্রবেশ বন্ধের জন্য আইন করা হয়েছে। অফিসারেরা তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন, তাই সংশোধনাগারে প্রবেশের আগে মোবাইল উদ্ধারও হচ্ছে।’’