পুজোর আগেই নিউ টাউনে সম্পত্তিকর নির্ধারণের কাজ শেষ করে কর আদায় শুরু করতে চাইছে ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (এনকেডিএ)। ইতিমধ্যেই এনকেডিএ সম্পত্তিকর সম্পর্কে খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছে। বাসিন্দাদের যদিও মত, এই ব্যবস্থার চাহিদা নিয়ে শুনানির পরে চূড়ান্ত কর কাঠামো ঘোষণা হবে। সূত্রের খবর, পুজোর আগেই সম্পত্তিকর আদায় প্রক্রিয়া চালুর চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। তবে তা নির্ভর করছে খসড়া প্রস্তাব নিয়ে মানুষের অভিযোগ, পরামর্শ কিংবা দাবি কতটা উঠে আসে তার উপরে।
বাম আমল থেকে নিউ টাউনে জমি বণ্টন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন পরিষেবা পৌঁছে দিতে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে চলেছে সংস্থার। কিন্তু সম্পত্তিকর আদায়ের বালাই না থাকায় সংস্থার ঘাটতি বেড়েই চলেছে। আরও উন্নত পরিষেবা দিতে চায় সংস্থা। সে ক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন।
এ বার তাই কলকাতা পুরসভার ধাঁচে ইউনিট এরিয়া ট্যাক্সের মতো ব্যবস্থায় সম্পত্তিকর আদায়ের কাজ শুরু করছে এনকেডিএ। সংস্থার কর্তারা জানান, নিউ টাউনে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে, তার অনেকটাই পূরণ হবে কর আদায় হলে। তবে কর আদায়ের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে চালুর ভাবনা রয়েছে। তাই নিয়ে ইতিমধ্যেই ওয়েবেলের সঙ্গে পর্যালোচনা করছেন কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, অনলাইনেই সেলফ অ্যাসেসমেন্ট করবেন বাসিন্দারা।
কর কাঠামো নির্ধারণের জন্য নিউ টাউনকে ৮টি ভাগে ভাগ করেছেন কর্তৃপক্ষ। নিউ টাউনে কোথাও অভিজাত বসতি এলাকা, কোথাও পিছিয়ে পড়া এলাকা, কোথাও শিল্পতালুকের মতো অঞ্চল। অর্থাৎ, নানা ভাগ রয়েছে। ফলে সর্বত্র একই ধরনের কর কাঠামো সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাই সেই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে জমির মাপ, মূল্য-সহ একাধিক মাপকাঠিতে সম্পত্তিকর নির্ধারণ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে জমির দাম, বাড়ি তৈরির মূল্য। সঙ্গে দেখা হবে জমিটি ব্যবহার হচ্ছে শিল্পের জন্য না কি বসবাসের জন্য। এমনকী, জমিতে বসবাসকারী মালিক না ভাড়াটে তাও কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচ্য হবে বলে এনকেডিএ সূত্রের খবর।
তবে নিউ টাউনে এখনও বহু প্লট ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অথচ তার মধ্যে বহু জমি ইতিমধ্যেই বণ্টন হয়ে গিয়েছে। হিডকো সূত্রের খবর, যাঁরা জমি কিনে ফেলে রেখে দিয়েছেন, তাঁদের কাছে নোটিস পাঠানো হবে। এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘আরও উন্নত পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। অনলাইনে কর আদায়ের প্রক্রিয়াও তারই অঙ্গ। ইতিমধ্যেই খসড়া জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে। সেই প্রস্তাব বিষয়ে মানুষের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত কর নির্ধারণ করা হবে।’’