এপিডিআরের মিছিলে হামলা, নিন্দা মুখ্যমন্ত্রীর

দেশ জুড়ে যে যুদ্ধ জিগির এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে, তার প্রতিবাদে বুধবার মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৬
Share:

দেশ জুড়ে যে যুদ্ধ জিগির এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে, তার প্রতিবাদে মিছিল। ছবি: পিটিআই।

পুলওয়ামা-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে দেশ জুড়ে যে যুদ্ধ জিগির এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে, তার প্রতিবাদে বুধবার মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। জানবাজারের কাছে সেই মিছিলের উপর কয়েক জন যুবক ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই হামলার জন্য সরাসরি দায়ী করেছেন বিজেপিকে। নবান্ন থেকে তিনি বলেন, ‘‘এপিডিআরের মিছিলে বিজেপির দুষ্কৃতীরা হামলা করেছে। পুলিশকে বলেছি কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘হামলা যে বিজেপি-আরএসএস করেছে, তার প্রমাণ কী?’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘হামলা সমর্থন করি না। কিন্তু এই বিষয়ে মিছিলও করা ঠিক হয়নি।মানুষের আবেগের বিরুদ্ধে গেলে আক্রমণ হতে পারে।’’

এ দিন বেলা ৩টে নাগাদ মৌলালি থেকে মিছিল শুরু করে এপিডিআর। জানবাজারের কাছে আচমকা কয়েক জন যুবক জাতীয় পতাকা নিয়ে হইহই করে মিছিলের দিকে ধেয়ে যান। তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘ভারত মাতা কী জয়’। এপিডিআরের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘আমাদের দিকে তেড়ে আসার সময় ওরা বলছিল, আমরা দেশদ্রোহী, আমাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।ওরা ঝান্ডার লাঠি নিয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।শাহ রেজা আলম নামে আমাদের এক কর্মী আহত হন। তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।’’

Advertisement

ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এপিডিআর-সহ বামেরা। রঞ্জিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘যে সময়ে ওরা আমাদের মিছিল আটকায়, তখন পুলিশ ছিল দর্শকের ভূমিকায়।ওদের আক্রমণ দেখে আমাদের কর্মীরাও প্রত্যাঘাত করার চেষ্টা করে। তখনই পুলিশ মাঝখানে এসে ওদের আটক করে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নাথুরাম গডসের উত্তরসূরীরা দেশপ্রেমের নামে তাণ্ডব শুরু করেছে। যুদ্ধ বিরোধী মিছিলে হামলার অধিকার কারও নেই। বার বার এই ধরনের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।’’ কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘পাশবিক আক্রমণ কোনও রাজনীতি নয়। এর কড়া প্রতিরোধ হবে।’’ সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের রাজ্য সম্পাদক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশের উপস্থিতিতে কী ভাবে হামলা হল, তার জবাব দিতে হবে কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে।’’

অন্য দিকে, এ দিন দেশপ্রেমের নামে হুমকি দেওয়া এবং অশান্তি সৃষ্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে হেয়ার স্ট্রিট থানায়। পুলওয়ামা-কাণ্ডে সেনাদের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করায় প্রেসিডেন্সি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিরুদ্ধেফেসবুক পেজে নানা হুমকি আসছিল বলে অভিযোগ। ওই সাত ছাত্রী বুধবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন