জমি নিয়ে গোলমালের জেরে অবরুদ্ধ হল রেল। মঙ্গলবার দুপুরে জমি থেকে উৎখাতের প্রতিবাদে টিটাগড় ও খড়দহ স্টেশনের মাঝে রেললাইনে বসে পড়েন বেশ কয়েক জন চাষি। তাঁদের সেই আন্দোলনে শামিল হন খড়দহ পুরসভার তৃণমূলের মহিলা কাউন্সিলরও। অবরোধের জেরে নাকাল হতে হয় শিয়ালদহ মেন শাখার যাত্রীদের।
ওই কাউন্সিলরের অভিযোগ, টিটাগড় এবং খড়দহ পুরসভা জোর করে কৃষকদের জমি কেড়ে নিচ্ছে। দুই পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যাঁরা পুরসভার জমি দখল করে চাষ করছেন, আইন মেনে তা উদ্ধার করা হবে। আগামী শনিবার ওই জমি উদ্ধারে ফের যাবে বলে জানিয়েছে দুই পুরসভা।
টিটাগড় পুরসভা সূত্রের খবর, টিটাগড় এবং খড়দহের মাঝে তাদের ৩০০ বিঘা জমি রয়েছে। যার ১৫০ বিঘা পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ-সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। পুরসভা অনুমতি দেওয়ায় বাকি জমিতে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি পরিবার চাষ করছে। সে জমির মালিকানা পুরসভারই। ২০১৩ সালে পাঁচটি পুর এলাকায় জল সরবরাহের জন্য সেখানে একটি প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল। এ জন্য আলোচনার ভিত্তিতে ২৪ জন চাষির থেকে ১৫ বিঘা নেওয়া হয়েছিল। স্থির হয়েছিল, তাঁদের সম পরিমাণ জমি চাষের জন্য দেওয়া হবে। কিন্তু জল প্রকল্প চালুর পরেও তাঁরা জমি না পাওয়ায় আন্দোলনে নেমেছিলেন। এর পরেই তাঁদের জমি দেওয়ার শুরু করে দুই পুরসভা।
মঙ্গলবার সকালে দুই পুরসভার কর্তা এবং পুলিশকর্মী গিয়ে মাপজোক করে দুই চাষিকে জমি ফিরিয়ে দেন। এর পরেই একদল চাষি বিক্ষোভ শুরু করেন। তাতে শামিল হন স্থানীয় কাউন্সিলর আরতি হালদার। বন্ধ হয়ে যায় জমি হস্তান্তর। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ আন্দোলনকারীরা খড়দহ স্টেশনের আগে লাইনে বসে পড়েন। অবরোধের ফলে আপ এবং ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট চলে অবরোধ। রেলপুলিশ গিয়ে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়।
টিটাগড়ের পুরপ্রধান প্রশান্ত চৌধুরী জানান, পরে থাকা ১৩৫ বিঘা জমিতে এমন অনেকে আছেন, যাঁরা অনুমতির থেকেও বেশি জমি দখল করে চাষ করছেন। এমন চাষিদের চিহ্নিত করে অতিরিক্ত জমি উদ্ধার করা হচ্ছে। সেই জমি ২৪ জন চাষিকে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘একদল চাষের জমি পাবেন না, আর কিছু মানুষ বেশি জমি দখল করবেন, তা হয় না।’’
খড়দহের পুরপ্রধান তাপস পাল বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলর কিছু না জেনেই গিয়েছিলেন। শনিবার বাকি ২২ জনকে জমি দেওয়া হবে।’’