ঝিল বোজানোর অভিযোগ, চাঞ্চল্য

রাস্তা তৈরির অজুহাতে সাঁতরাগাছি স্টেশনের পাশে একটি জলাশয় মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার এই অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সাঁতরাগাছি এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ ও অফিসারেরা।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৫ ০১:২১
Share:

এ ভাবেই চলছে কাজ। বৃহস্পতিবার, সাঁতরাগাছিতে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

রাস্তা তৈরির অজুহাতে সাঁতরাগাছি স্টেশনের পাশে একটি জলাশয় মাটি ফেলে বুজিয়ে ফেলছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার এই অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সাঁতরাগাছি এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ ও অফিসারেরা। পুরসভার অভিযোগ, রেল কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কথা না বলে শহরের গুরুত্বপূর্ণ ওই জলাশয় বুজিয়ে ফেলছে। ফলে আগামী বর্ষায় জমা জলে ভাসতে পারে গোটা এলাকা। রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, মুম্বই রোড তৈরির সময়ে রেলের ওই জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় ওই কৃত্রিম জলাশয় তৈরি হয়েছিল। সেখানেই মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। জলাশয় বোজানো হয়নি।

Advertisement

হাওড়া থেকে খড়্গপুর যাওয়ার পথে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মেন লাইনের বাঁ দিকে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে এই ঝিল। শুক্রবার তা বোজাতে দেখে স্থানীয়েরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের বক্তব্য, উন্নয়নের প্রয়োজন আছে ঠিকই, কিন্তু তা পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। রেল কর্তৃপক্ষ চাইলে ওই ঝিলের উপরে উড়ালপুলের মতো ব্যবস্থা করে রাস্তা বা প্ল্যাটফর্ম বানাতে পারেন। তা না করে কেন তাঁরা ঝিল বোজাতে শুরু করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।

এমনিতেই বর্ষায় কয়েক পশলা বৃষ্টিতে হাওড়ার ৫০টি ওর্য়াডের মধ্যে ৩০টিতে হাঁটুজল জমে। তা নামাতে রেলের এই সমস্ত ঝিলের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। ঝিল বোজানোর খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থলে যান হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) শ্যামল মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘ওই ঝিলটি বর্ষায় জগাছা ও সাঁতরাগাছির জলাধার হিসাবে কাজ করে। এলাকার সমস্ত জল গিয়ে সেখানে জমা হয়। ঝিলটি বুজে গেলে এলাকাগুলি জমা জলে ভাসবে। ভোগান্তি বাড়বে মানুষের।’’

Advertisement

রেল সূত্রে খবর, হাওড়ায় ট্রেনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাঁতরাগাছিকেই দক্ষিণ-পূর্ব রেল অন্যতম টার্মিনাল স্টেশন হিসেবে গড়ে তুলছে। তাই সাঁতরাগাছি প্ল্যাটফর্মটির পাশাপাশি আরও প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ চলছে। যাতায়াত আরও সুগম করতে তৈরি হচ্ছে এই রাস্তা। কিন্তু উন্নয়নের কাজের জন্য পরিবেশ কেন নষ্ট করা হচ্ছে?

দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তারা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, যে জলা বোজানো হচ্ছে তা কৃত্রিম। সেখানে পাখি আসে না। সাঁতরাগাছি ঝিলের মূল অংশ অপরিবর্তিত আছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘মুম্বই রোড তৈরির সময়ে যেখান থেকে মাটি নেওয়া হয়েছিল সেটাই পরিবর্তন হয়ে জলা হয়েছে। তা কৃত্রিম।’’ রেল কর্তার ওই বক্তব্যে মেয়র রথীন চক্রবর্তী ক্ষোভের সুরে বলেছেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি ওই জলা। রেলের গল্প মানা যাবে না। প্রয়োজনে আইনি সাহায্য নেওয়া হবে।’’ পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘কাজের আগে রেল পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র নিয়েছে কি না দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন