পরিদর্শনে রেলের টিম। ফাইল চিত্র।
সমন্বয় নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে যৌথ পরিদর্শনের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু রেল-রাজ্য যৌথ পরিদর্শনের পরেও মাঝেরহাটে বিকল্প রাস্তা নিয়ে সমস্যার জট খুলল না। রাজ্য চাইলেও মাঝেরহাটে নতুন লেভেল ক্রসিং তৈরিতে সায় নেই রেলের।
রেলের তরফে রাজ্যের কাছে গোরাগাছা রোড ও হাইড রোডের মধ্যে চার নম্বর গেট সংলগ্ন লেভেল ক্রসিংয়ের পরিসর দ্বিগুণ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও পুলিশ তা মানতে রাজি নয়। কারণ হাইড রোডে এখনই যানবাহনের চাপ প্রচণ্ড। নতুন করে গোরাগাছা রোড দিয়ে আরও যানবাহন এনে ফেললে ওই রাস্তায় যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুলিশকর্তারা।
রাজ্যের তরফে রেলকে চিঠি দেওয়ার পরে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার হরীন্দ্র রাওয়ের সঙ্গে বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে দু’তরফেই বরফ গলা শুরু হয়। শুক্রবার সকালে রেলের তরফে পূর্ত দফতর এবং পুলিশকর্তাদের নিয়ে যৌথ পরিদর্শনের ব্যবস্থা হয়।
বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রেলের নিজস্ব বাতানুকূল পরিদর্শন যানে নিউ আলিপুর থেকে রওনা হয়ে ব্রেস ব্রিজ পর্যন্ত পুরো পথ ঘুরে দেখেন পূর্তসচিব অর্ণব রায়, অতিরিক্ত নগরপাল বিনীত গোয়েল এবং শিয়ালদহের ডিআরএম প্রভাস দানসানা। রেলের তরফে রাজ্য পুলিশ এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের জানানো হয়, নিউ আলিপুরের দিকে পাঁচটি লাইন রয়েছে। তুলনায় মাঝেরহাট স্টেশন পেরিয়ে বজবজের দিকে
আছে দু’টি লাইন। নিউ আলিপুরের দিকে ট্রেনের যাতায়াত বেশি। অনেক ক্রসিং পয়েন্ট এবং সিগন্যাল
পোস্ট রয়েছে। যা সরিয়ে লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য জায়গা খুঁজে বার করা কার্যত অসম্ভব।
এক রেলকর্তা জানান, সারা দিনে ওই পথে প্রায় ১০০টি ট্রেন চলে। এক বার লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ করতে এবং খুলতে গড়ে ছয় মিনিট লাগে। সারা দিনে সব ট্রেনের জন্য রাস্তা খুলে দিতে গেলে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় খরচ হবে। ফলে সব কিছু বজায় রেখে মাঝেরহাটে লেভেল ক্রসিং দিয়ে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব। রেলকর্তাদের দাবি, কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির কাছ থেকে নতুন লেভেল ক্রসিংয়ের অনুমতি আদায় করা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নতুন লেভেল ক্রসিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত কর্মীরও ব্যবস্থা করতে হবে। তুলনায় গোরাগাছা রোড ও হাইড রোডের মধ্যে চালু লেভেল ক্রসিংটিকে প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে সমস্যা অনেক কম। রেলের এক কর্তা বলেন, “লেভেল ক্রসিং কখনওই মাঝেরহাট সেতুর বিকল্প হতে পারে না। পুরনো পথ দ্রুত তৈরি করে ফেলাই একমাত্র সমাধান। ওই কাজে রেলও সাহায্য করতে পারে।”
পুলিশকর্তারা জানান গোরাগাছা রোডের হাল খুব খারাপ। হাইড রোডে পণ্যবাহী ট্রাক এবং অন্য যানবাহনের চাপ অত্যন্ত বেশি। এর মধ্যে গোরাগাছা রোড দিয়ে আরও যানবাহন হাইড রোডে এনে ফেললে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।