বিধাননগর পুর নিগম

র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স সত্ত্বেও মশা দমনে পিছিয়ে

দুই পুরসভা যুক্ত হয়ে তৈরি হয়েছে বিধাননগর পুর নিগম। অথচ পরিকাঠামো পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই। ডেঙ্গির মোকাবিলা করতে নেমে সেই পরিকাঠামোর অভাবই যেন বারবারই প্রকাশ্যে এসে পড়ছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:১০
Share:

লার্ভার পাঠ। শুক্রবার, বালিগঞ্জের একটি স্কুলে।ছবি:শুভাশিস ভট্টাচার্য

দুই পুরসভা যুক্ত হয়ে তৈরি হয়েছে বিধাননগর পুর নিগম। অথচ পরিকাঠামো পড়ে রয়েছে সেই তিমিরেই। ডেঙ্গির মোকাবিলা করতে নেমে সেই পরিকাঠামোর অভাবই যেন বারবারই প্রকাশ্যে এসে পড়ছে।

Advertisement

ডেঙ্গির মশা নিধনের কাজের জন্য পুর নিগম থেকে ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স’ তৈরি করা হয়েছিল সল্টলেক পুরসভা থাকাকালীন। কিন্তু তার পরিকাঠামো ছিল মাত্র ২৫টি ওয়ার্ডের জন্য। এখন ওয়ার্ড বেড়ে হয়েছে ৪১টি। অথচ পরিকাঠামো রয়েছে তিমিরেই।

ফলে ওই ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স’ নিয়ে এখন সল্টলেক ও রাজারহাটের মধ্যে কার্যত দড়ি টানাটানির চলছে। একেই কর্মী কম, তার উপরে আবার সেই ফোর্সের কর্মীদের তেমন ভাবে দেখাই মিলছে না বলেই অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার মশা দমনকারী বিশেষ দল এ দিন বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল, সাউথ পয়েন্ট স্কুলে অভিযান চালায়। পুরসভার পতঙ্গবিদ জানান, ওই দুই স্কুলে কয়েকটি জায়গায় ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে।

ইতিমধ্যেই বিধাননগর পুর নিগম এলাকা থেকে ডেঙ্গির বলি হয়েছেন তিন জন। ফলত প্রতি দিন এলাকায় মশার তেল দেওয়ার জন্য নাগরিকদের তরফ থেকে চাপ বাড়ছে জনপ্রতিনিধিদের ওপরে। এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দাবিও কাউন্সিলরদের কাছে জানাচ্ছেন নাগরিকেরা। অথচ বাস্তবে সেই কাজ তেমন ভাবে হচ্ছে না বলেই অভিযোগ নাগরিকদের। সেই দাবির সঙ্গে কোথাও কোথাও সহমতও হচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরাও।

তাঁদের সেই দাবি যে একেবারে অমূলক নয়, শুক্রবার দুপুরে কিছু জায়গায় ঘুরে তা নজরেও এসেছে। বাগুইআটির ঘোষপাড়া এলাকায় বুধবার রাতে মৃত্যু হয় রুমন ওরফে বাবান ঘোষ নামে তেইশ বছরের এক যুবকের। এ দিন পুর নিগমের লোকজন তাঁর বাড়ির আশপাশে ব্লিচিং আর মশার তেল ছড়ালেও ওই জায়গার একশো মিটারের মধ্যেই ডিপোর মাঠ এলাকা জল-জঙ্গলে ঢেকে রয়েছে। সেখানে কেউ মশার তেল দিতে যায় না বলেই অভিযোগ। সূত্রের খবর, ওই মাঠটিতে স্টেডিয়াম তৈরির কথা ছিল। তা তো হয়নি, উল্টে জায়গাটি মশার আঁতুড়ঘর হয়ে পড়ে রয়েছে।

পুরকর্তাদের দাবি, সল্টলেকে ১৩৮ জন, রাজারহাটের জন্য ১০৮ জন স্থায়ী এবং অস্থায়ী কর্মী কাজ করছেন। এ ছাড়া বরো পিছু ৮ সদস্যের একটি বিশেষ দলকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স’কে বিধাননগর, রাজারহাট ও নিউ টাউন এলাকায় আলাদা আলাদা করে কাজে লাগানো হচ্ছে। অথচ কাউন্সিলরদের একাংশের অভিযোগ, ২-৩ জনের বেশি কর্মী প্রতি দিন মিলছে না। ফলে এক বার একটি এলাকায় মশার তেল স্প্রে কিংবা ফগিং-এর কাজ করার পরে ঘুরে সেই এলাকায় ফিরতে সময় লেগে যাচ্ছে।

বিধাননগর পুর নিগমের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় তাঁদের কর্মীর অভাবের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘রাজারহাটের দিকে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া মোকাবিলার জন্য আলাদা কোনও ব্যবস্থা কোনওদিনই ছিল না। এখন প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে। লোকসংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন